রাজবাড়ীর রাজীব খানের শরীর থেকে ৩০টির মতো গুলি বের করা হলেও, এখনও কানের লতির নিচে, ঘাড়, গলা, হাতের কব্জিসহ স্পর্শকাতর স্থানে গুলি রয়ে গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফরিদপুরে পুলিশের গুলিতে আহত রাজীব এখনো বেঁচে থাকার লড়াই করছেন।
কী ঘটেছিল সেই দিন?
রাজীব খান (২৮) রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার ধুলিয়াট গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। ৪ আগস্ট তিনি ফরিদপুরে ছাত্র-জনতার মিছিলে যোগ দেন।
মিছিল জনতা ব্যাংক মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ হঠাৎ গুলি চালায়। রাজীবের শরীরে ৪০-৪৫টি শটগানের গুলি বিদ্ধ হয়। ঘটনাস্থলে ১৪-১৫ জন আহত হন। জুলাই বিপ্লবের সংগ্রামী রাজীবকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয় কিন্তু পুলিশি গ্রেপ্তার আতঙ্কে রাত ১০টার মধ্যে হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য হন।
রাজীব চারটি হাসপাতালে অপারেশন করিয়েছেন—
পাংশা আধুনিক ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, ১৬ জানুয়ারি সিএমএইচ ও ২৮ জানুয়ারি জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল (পঙ্গু হাসপাতাল)। তবে চিকিৎসকরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন—
"আরও অপারেশন করতে হলে ঝুঁকি আছে, দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা লাগবে।"
অর্থসংকটে চিকিৎসা অনিশ্চিত
রাজীবের মা মমতাজ বেগম বলেন—
“আমার স্বামী একজন চাষি। অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চলে। রাজীবের চিকিৎসার টাকা কোথা থেকে আসবে? সরকারের কাছে ছেলের উন্নত চিকিৎসার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু কোনো সরকারি সহায়তা নেই!
রাজীব জানান—
"কোনো সরকারি সহযোগিতা পাইনি। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশ্বাস দিলেও এখনো কিছু মেলেনি।"
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আহতদের তালিকায় রাজীবের নাম ৪৫ নম্বরে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তালিকায় কেস নং ৮১১০।
রাজীবের চিকিৎসার জন্য সাহায্য প্রয়োজন
রাজীবের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকার ও মানবিক সংগঠনগুলোর এগিয়ে আসা জরুরি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে নেওয়ার ব্যবস্থা করাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আপনার মতামত লিখুন :