খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৩তম সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। শিক্ষার্থীরা যদি কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তবে তাদের আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে। একই সঙ্গে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবেন না।
গতকাল ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম. এম. এ. হাসেমকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শেখ শরীফুল আলম প্রথম আলোকে জানান যে, গতকালের ঘটনায় বহিরাগতদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িত শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার করা হবে। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সমস্ত ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সংঘর্ষের ঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল রাতে ক্যাম্পাসের মেডিকেল সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সেখানে পাঁচ দফা দাবি পেশ করা হয়:
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকলে আজীবন বহিষ্কারের বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি করা।
২. সংঘর্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা এবং যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা।
৩. ক্যাম্পাসে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রাখা।
৪. আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহন করা।
৫. ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে যে, ক্যাম্পাসে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোনো ধরনের রাজনৈতিক কার্যকলাপ সহ্য করা হবে না। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কুয়েট প্রশাসন শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।
আপনার মতামত লিখুন :