বাংলাদেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার নিষিদ্ধ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে অতীতে প্রচারিত বক্তব্য দ্রুত অপসারণের নির্দেশও দিয়েছে।
আজ ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বৃহস্পতিবার) রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রাষ্ট্রপক্ষের দাবি শেখ হাসিনার এসব বক্তব্য তদন্ত ও বিচারের প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করছে এবং সাক্ষীদের ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হতে নিরুৎসাহিত করছে। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালত উল্লেখ করেছে এমন বক্তব্য ভবিষ্যতে প্রচার বা প্রকাশিত হওয়া বন্ধ রাখতে হবে।
ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে এসব বক্তব্য দ্রুত সরিয়ে ফেলতে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন বক্তব্য আর প্রচারিত না হয় তা নিশ্চিত করতে। প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আল নোমান জানিয়েছেন, ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স (সাবেক টুইটার) সহ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মগুলোকে লিখিতভাবে এই আদেশ পৌঁছে দেওয়া হবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হোসেন জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপক্ষ ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য নিয়ে। এই বক্তব্যগুলো বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে। তদন্তকারী কর্মকর্তারাও এ ধরনের বক্তব্যের প্রমাণ পেয়েছেন যা তদন্ত এবং বিচারকে প্রভাবিত করতে পারে।
ট্রাইব্যুনালও মতামত দিয়েছে শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের কারণে মামলার সাক্ষীরা ভীত হয়ে পড়ছেন এবং আদালতে হাজির হতে ভয় পাচ্ছেন। এসব বক্তব্য তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
গত জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু করার ঘোষণা দেয়। শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও দলের নেতাদের বিরুদ্ধে গণহত্যাসহ নানা অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে ৭ অক্টোবর ২০২৪, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আওয়ামী লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগের বিচার শুরুর দিনই এই আদেশ দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের প্রচার নিষিদ্ধ করে তা দ্রুত অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের বক্তব্য যাতে আর প্রচারিত না হয় তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। এই আদেশ বিচারের স্বচ্ছতা এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :