কুয়েটে হামলার প্রতিবাদে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে খুবির হাদী চত্বরে সমবেত হয়ে এ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

বিক্ষোভ মিছিলটি হাদী চত্বর থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে এবং শেষ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে। শিক্ষার্থীরা ‘সন্ত্রাসীদের গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, এবং ‘জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো, অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’সহ বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগানে মুখরিত করেন পুরো ক্যাম্পাস।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাসী হামলার জন্য দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। তাঁরা বলেন, “আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, অতি দ্রুত হামলাকারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনুন। যদি কোনো হামলাকারী ছাড় পায়, তা হবে জুলাই আন্দোলনের শহিদদের প্রতি অবমাননা। কুয়েটসহ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছে, তাদের সেই অবস্থানকে সম্মান জানাতে হবে।”

আরও পড়ুন

কুয়েটে ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে বুয়েটে বিক্ষোভ

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, “আমরা কুয়েট প্রশাসনকে জানিয়ে দিতে চাই, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে গিয়ে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি পুনর্বাসনের চেষ্টা করবেন না। অন্যথায়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি ঘোষণা করবে।”

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া জুবায়ের আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা আমাদের ভাইদের রক্তের জবাব চাই। কেউ যদি লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি করতে চায়, আমরা তার কঠোর জবাব দেব। নতুন বাংলাদেশে ছাত্রলীগের স্টাইল ও ফ্যাসিবাদী কায়দায় হামলা চলবে না।”

আরেক শিক্ষার্থী সাজিদ ইসলাম বলেন, “সন্ত্রাসীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মমভাবে হামলা চালিয়েছে। তাঁদের এ হামলায় ৭০ জনের অধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আমরা এ সন্ত্রাসী হামলার বিচার চাই। প্রশাসনকে অনুরোধ করছি, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।”

গতকাল কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে শাখা ছাত্রদল ও বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

খুবির শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে নিরাপদ ও নিরপেক্ষ পরিবেশ চাই। কোনো সন্ত্রাসী কিংবা ছাত্ররাজনীতির লেজুড়বৃত্তি আমাদের ক্যাম্পাসে সহ্য করা হবে না। এই হামলার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।”

বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবির বিষয়ে একাত্মতা প্রকাশ করে আরও আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলেও ইঙ্গিত দেন।