রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় যৌথ বাহিনী একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযান পরিচালনা করেছে। এই অভিযানের প্রেক্ষাপটে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) আজ বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি প্রদান করেছে। বিবৃতির শিরোনাম ছিল: ‘মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় যৌথ বাহিনীর উপর গুলি, নিহত ২, অস্ত্রসহ আটক ৫’।
আইএসপিআরের দেওয়া বিবৃতি অনুযায়ী, মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় একটি সন্ত্রাসী চক্র ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করছিল—এমন তথ্যের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে যৌথ বাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। অভিযানের সময় বাহিনীটির সদস্যরা এলাকার একটি গলির দুই পাশ থেকে অবস্থান নেয় এবং সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করে।
অভিযানের এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা একটি একতলা ভবনের ছাদ থেকে যৌথ বাহিনীর উপর অতর্কিতে গুলি চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাহিনীটি আত্মরক্ষার্থে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এই সংঘর্ষের মধ্যেই বাহিনীর সদস্যরা পাঁচজন সন্ত্রাসীকে আটক করতে সক্ষম হয়। অভিযানের পরপরই সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত ভবনটি তল্লাশি করা হয় এবং ছাদের ওপর থেকে দুজন সন্ত্রাসীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, আটক সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, চারটি গুলি ও একটি ধারালো চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাঁদের মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং তাঁদের সঙ্গে কোনো বড় ধরনের অপরাধী চক্রের যোগসূত্র আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আইএসপিআরের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয় যে, দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকবে। বিবৃতিতে সাধারণ জনগণকে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ব্যাপারে সতর্ক থাকার এবং সন্দেহজনক কোনো কার্যকলাপ দেখলে তা নিকটস্থ থানায় জানানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এ ধরনের অভিযান নতুন নয়। এর আগেও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যৌথ বাহিনী বেশ কিছু সফল অভিযান পরিচালনা করেছে, যেখানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও অন্যান্য অবৈধ দ্রব্য উদ্ধার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র জানায়, এই অভিযানের মাধ্যমে মোহাম্মদপুরসহ আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার হবে।
অভিযান-পরবর্তী সময়ে স্থানীয় বাসিন্দারা আইএসপিআর ও যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। তাঁরা জানান, সম্প্রতি চাঁদ উদ্যান এলাকায় অপরাধমূলক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছিল। যৌথ বাহিনীর এই অভিযান তাঁদের মনে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, এই ধরনের অপরাধমূলক কার্যকলাপ রোধে নিয়মিতভাবে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে। সন্ত্রাসী ও অপরাধী চক্রের শিকড় উপড়ে ফেলার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর পাশাপাশি জনগণের সহায়তা পেলে এ ধরনের অভিযান আরও ফলপ্রসূ হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
এই অভিযানের মাধ্যমে সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থান যে আরও শক্তিশালী হয়েছে, তা আবারও প্রমাণিত হলো। যৌথ বাহিনী ভবিষ্যতে আরও তৎপর থাকবে বলেও নিশ্চিত করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :