ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ধলপুর এলাকার একটি আবাসন প্রকল্পে বহিরাগতদের ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ উঠেছে। গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পরিবর্তনের পর সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত ফ্ল্যাটগুলো তালা ভেঙে দখল করা হয়। তবে করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রশাসনিক জটিলতার কারণে দখলদারদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হচ্ছে না।
ফ্ল্যাট দখলের প্রেক্ষাপট
সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নব্বইয়ের দশকে যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে এই আবাসন প্রকল্পটি তৈরি করা হয়। সেখানে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য ২৩টি ভবনে ১৮০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে তিন বছর আগে এসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয় এবং ফ্ল্যাটগুলো খালি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। চাকরি শেষে চলে যাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ফ্ল্যাটগুলো তালাবদ্ধ ছিল।
বর্তমান অবস্থা
বর্তমানে ১১৫টি ফ্ল্যাটে করপোরেশনের কর্মচারীরা বসবাস করছেন, তবে বাকি ৬৫টি ফ্ল্যাট বহিরাগতদের দখলে চলে গেছে। স্থানীয় সূত্র ও বাসিন্দাদের মতে, করপোরেশনের অস্থায়ী কর্মীরা এবং তাঁদের আত্মীয়স্বজন অনেক ফ্ল্যাট দখল করেছেন। এমনকি কেউ কেউ এগুলো ভাড়া দিয়েছেন।
বাসিন্দাদের অভিযোগ
কিছু বৈধ বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন যে, বহিরাগতদের আগমনের ফলে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে। এমনকি কিছু ফ্ল্যাট থেকে মাদক ব্যবসা চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। একাধিকবার করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বহিরাগতদের বক্তব্য
দখলকারীদের মধ্যে কেউ কেউ দাবি করেছেন, তাঁরা ফ্ল্যাটগুলো ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, তাঁদের আত্মীয়স্বজন একসময় করপোরেশনে চাকরি করতেন, তাই ফাঁকা ফ্ল্যাট থাকার কারণে সেখানে এসে উঠেছেন।
সিটি করপোরেশনের অবস্থান
সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করপোরেশনের নিজস্ব কোনো উচ্ছেদ বাহিনী নেই। পুলিশের সহযোগিতা ছাড়া দখলদারদের সরানো সম্ভব নয়। তাছাড়া করপোরেশনের প্রশাসক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা না থাকায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে। তবে শিগগিরই দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী।
ফ্ল্যাট দখলের ফলে সৃষ্ট সমস্যা
- বৈধ বাসিন্দাদের নিরাপত্তাহীনতা
- মাদক ব্যবসার অভিযোগ
- বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিল বহন করছে করপোরেশন
- ভবনগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা অব্যবহিত থাকা
সিটি করপোরেশন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এ সমস্যা আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :