বাংলাদেশ রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

ক্ষমতার বলয়ে এখনো প্রভাবশালী ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলারা

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫, ১২:০৯ পিএম

ক্ষমতার বলয়ে এখনো প্রভাবশালী ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলারা

এখনো প্রভাবশালী ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলারা: ছবি সংগৃহীত

গত সাড়ে ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে অনিয়ম ও লুটপাটে সহযোগী হিসেবে কাজ করা ৩২ জন উচ্চপদস্থ আমলা এখনো প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। জনপ্রশাসনের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থায় তারা সচিব বা সমমর্যাদার পদে আসীন।

প্রশাসনে অচলাবস্থা ও চ্যালেঞ্জ

জনপ্রশাসনের শীর্ষপদে থাকা এসব কর্মকর্তারা আলাদা বলয় তৈরি করেছেন, যা প্রশাসনের গতিশীলতা বাধাগ্রস্ত করছে। বিভিন্ন নীতির বাস্তবায়ন ব্যাহত হওয়ায় প্রশাসনের শৃঙ্খলা ফেরানো সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের সরানোর পর দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তার অভাবও প্রকট হয়ে উঠেছে।

ভোট জালিয়াতির কারিগররা এখনো প্রশাসনে

বিগত নির্বাচনে অনিয়মে জড়িত ডিসি ও এসপি পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের অনেকেই এখনো প্রশাসনের নীতিনির্ধারণী পদে বহাল আছেন। জনপ্রশাসনকে জনবান্ধব করতে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি কাজ করলেও আশানুরূপ ফল মেলেনি।

দুর্নীতির অভিযোগে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের আওতাধীন জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের ডিজি জাকিয়া খানমের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এমনকি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিয়েছেন, যা চাকরিবিধির গুরুতর লঙ্ঘন। দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করলেও তিনি এখনো পদে বহাল আছেন।

প্রশাসনে দলীয়করণের প্রভাব

২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করা ৬৪ জেলার ডিসিরা পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়েছেন। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে এখনো তাদের উপস্থিতি বিদ্যমান। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় এই প্রভাবশালী আমলারা নিজেদের বলয় গড়ে তুলেছেন।

পুলিশ প্রশাসনের বিতর্কিত ভূমিকা

পুলিশ প্রশাসনে এখনো সাবেক সরকারের অনুগত কর্মকর্তাদের আধিপত্য রয়েছে। গুম, নির্যাতন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় অভিযুক্ত অনেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা

সাবেক সিনিয়র সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ একটি সংস্কার প্রস্তাব পেশ করেছেন, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে গত ১৫ বছরে প্রশাসন দলীয় স্বার্থে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রশাসনকে দলীয় প্রভাব থেকে মুক্ত করতে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে।

জনবান্ধব প্রশাসন গঠনের উদ্যোগ

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মুখলেছুর রহমান জানিয়েছেন, প্রশাসনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও যোগ্যতার ভিত্তিতে জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি কাজ করছে।

Link copied!

সর্বশেষ :