বাংলাদেশ সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

একুশে পদক পাচ্ছেন অভ্র’র মেহেদী, তিন বন্ধুর সঙ্গে সম্মাননা গ্রহণ

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫, ০৬:৪২ পিএম

একুশে পদক পাচ্ছেন অভ্র’র মেহেদী, তিন বন্ধুর সঙ্গে সম্মাননা গ্রহণ

বাংলা ভাষায় লেখাকে সহজতর করার অবিস্মরণীয় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একুশে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন অভ্র কী-বোর্ডের আবিষ্কারক মেহেদী হাসান খান। তবে তিনি একা এই কৃতিত্ব নিতে চাননি। তাঁর সঙ্গে অভ্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা তিন বন্ধুও দলগতভাবে এই পদক গ্রহণ করবেন।

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার সরকার মেহেদীসহ ১৫ জনকে একুশে পদকের জন্য মনোনীত করে নাম ঘোষণা করে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান, মেহেদী হাসান খান একা পুরস্কার নিতে চাননি। তিনি তাঁর তিন বন্ধু— রিফাত নবী, তানবিন ইসলাম সিয়াম এবং শাবাব মুস্তাফা—যাঁরা অভ্র তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়েই সম্মাননা গ্রহণ করতে চান।

ফারুকী লিখেছেন, “আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি, স্রোতের বিপরীতে এগিয়ে যাওয়া এই চার গুণীকেই অভ্র’র জন্য দলগতভাবে একুশে পদকে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, চার বন্ধুই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলাদেশে আসছেন পুরস্কার গ্রহণ করতে। এ প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, “ক্যান্ট ওয়েট টু ওয়েলকাম ইউ অল। আই অ্যাম শিওর দিজ ইজ গোয়িং টু ইনসপায়ার আ লট অব ইয়াং পিপল টু মুভ ফরওয়ার্ড নো ম্যাটার হোয়াট। বাংলাদেশ, অনওয়ার্ডস অ্যান্ড আপওয়ার্ডস।”

ফারুকী পোস্টের শুরুতেই জানান, মেহেদী হাসান খান প্রথমে পুরস্কার গ্রহণে আগ্রহী ছিলেন না। এর আগেও তাঁকে একুশে পদকের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি গ্রহণ করেননি।

তিনি বলেন, “আমরা জানতাম, মেহেদী হাসান খান পুরস্কার নিতে চান না। তারপরও আমাদের মন্ত্রিসভা থেকে আমরা তাঁর নাম ঘোষণা করতে সম্মত হই, কারণ আমরা কাদের সেলিব্রেট করব, সেটার বার্তা দিতে চেয়েছি।”

শেষ পর্যন্ত মেহেদীর সঙ্গে আলোচনার পর তিনি তিন বন্ধুকে নিয়ে দলগতভাবে পুরস্কার গ্রহণে সম্মতি দেন।

অভ্র কী-বোর্ড বাংলা ভাষায় টাইপিং সহজ ও গণতান্ত্রিক করে তোলে। ২০০৩ সালে মেহেদী হাসান খান এটি তৈরি করেন এবং এটি বিনামূল্যে উন্মুক্ত করেন। অভ্র কী-বোর্ডের ফলে বাংলা টাইপিং সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য হয় এবং পরবর্তীতে ইউনিকোডভিত্তিক বাংলা লেখার মানদণ্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

অভ্র’র জনপ্রিয়তা শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের কাছে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

মেহেদী হাসান খান ও তাঁর তিন সহযোগীর দলগতভাবে একুশে পদক গ্রহণ বাংলা ভাষার প্রতি তাঁদের ভালোবাসা ও অবদানের স্বীকৃতি। এটি নতুন প্রজন্মকে উদ্ভাবনী কাজে অনুপ্রাণিত করবে এবং বাংলা ভাষার প্রযুক্তিগত উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

Link copied!

সর্বশেষ :