বাংলাদেশ সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১

ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করলো সরকার, আদৌ কি নিয়ন্ত্রণে আছে বাজার?

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪, ১০:৫৩ এএম

ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করলো সরকার, আদৌ কি নিয়ন্ত্রণে আছে বাজার?

নির্ধারণ হলো ডিম ও মুরগির দাম

প্রতিনিয়ত জনসাধারণের ক্রয় ক্ষমতা ঊর্ধ্বে  চলে যাচ্ছে নিত্য পন্যের বাজারমূল্য।  ব্যাতিক্রম নয় ডিম ও মুরগির বাজার। সম্প্রতি বাজার নিয়ন্ত্রণে ডিম ও মুরগির মূল্য নির্ধারন করে দিয়েছে সরকার। 

নতুন মূল্য অনুযায়ী উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ০১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে ডিমের মূল্য।

এছাড়াও সোনালি মুরগি কেজিপ্রতি মূল্য নির্ধারিত হয়েছে উৎপাদক পর্যায়ে ২৬০ টাকা ৭৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ২৬৪ টাকা ৫৭ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা। ব্রয়লার মুরগিতেও কেজিপ্রতি উৎপাদক পর্যায়ে ১৬৮ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১৭২ টাকা ৬১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

কিন্তু বাজার বলছে অন্য কথা। উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিম, সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দামে দেখা যাচ্ছে ব্যাপক হেরফের।  কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫  টাকা পর্যন্ত এবং সোনালি মুরগি ৩০০ টাকার মধ্যে। এতে পূর্বের দাম এবং সরকার নির্ধারিত দামের তুলনায় কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা বেশি হাতিয়ে নিচ্ছে অসাধু চক্র।

এক্ষেত্রে উৎপানকারীদের বক্তব্য পল্ট্রি ফিডের দাম আকাশচুম্বী। যা অন্যান্য দেশের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। সরকার যা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে তাতে তাদের উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে লাভের পরিমান খুবই সামান্য।

অন্যদিকে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছে বাজারে ডিম ও মুরগির তীব্র সংকট। তারা আরো অজুহাত টানছে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অসংখ্য খামার। যার ফলে কমে এসেছে ডিম ও মুরগির চালান।

ডিম সংকট নিরসনে ইন্ডিয়া থেকে আমদানি করা হয়েছে কিছু সংখক ডিম। কিন্তু  আমদানিকৃত প্রতি পিস ডিম ৭ টাকা করে হলে ডজন ৯০-১০০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয় সেখানে বাজারে প্রতি ডজন  ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। আমদানিকারকরা বলছে সকল শুল্ক দিয়ে ডিম প্রতি তাদের ১০ টাকা খরচ হচ্ছে। ডিম প্রতি তারা ২/৩ টাকা লাভ করতে গিয়ে হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে । সরকারের নিকট শুল্ক কমানোর দাবীও জানিয়েছে তারা ।

থেমে নেই উৎপাদনকারীরাও, তাদের মতে ফিডের দাম কমানো না হলে উৎপাদন খরচ কমানো অসম্ভব। ফিডের দাম কমলে স্বাভাবিকভাবেই উৎপাদন খরচ কমবে। যার প্রভাব ডিম ও মুরগি দামেও পরবে।তাই ফিডের দাম না কমিয়ে বাইরের দেশ থেকে আমদানি করাটা স্থানীয় খামারীদের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।

১১ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) বলেছে ডিমের দৈনিক চাহিদা ৪ কোটি এবং বর্তমানে স্থানীয় উৎপাদন দৈনিক ৪.৫ কোটি,  যা চাহিদার থেকেও বেশি। তাই তারা সরকারকে  হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে,  আমদানি বন্ধ না করলে স্থানীয় খামারীরা ডিম ও মুরগির উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হবে।

দেশের প্রাণিসম্পদ খাতের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি কর্পোরেট কোম্পানি ও তাদের এজেন্টরা পোলট্রি ফিডের দাম বাড়িয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তুলছে এবং প্রতিনিয়তই অস্থিতিশীল করে তুলছে বাজার।  শুধু দাম নির্ধারণ নয় এই সকল সিন্ডিকেট শক্তহাতে দমন করতে না পারলে সরকারের কোনো পদক্ষেপই ফলপ্রসু হবে না।
 

Link copied!

সর্বশেষ :