সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আজ রাজধানীর ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধানগণ গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকালে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তাঁরা জাতির গর্বের এ দিবসের প্রতি সম্মান জানান।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সকাল সোয়া ৮টায় শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় তাঁকে সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনীর একটি সম্মিলিত দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। তাঁর পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং তিন বাহিনীর প্রধানগণ শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান উপদেষ্টা শিখা অনির্বাণ চত্বরে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে সই করেন। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে দেশের কল্যাণ কামনা করে ভোরে সেনানিবাস, নৌঘাঁটি এবং বিমানবাহিনী ঘাঁটির মসজিদে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
বাণী প্রদান ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এবং সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। এতে তাঁরা সশস্ত্র বাহিনীর গৌরবময় ইতিহাস ও আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করেন এবং বাহিনীর উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
আইএসপিআরের তথ্য অনুযায়ী, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে এক বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। এখানে নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের মধ্যে শুভেচ্ছা স্মারক বিতরণ করবেন এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, তিন বাহিনীর প্রধান, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সামরিক-বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বিকেলের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বিকেল ৪টায় ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে আরও একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধান বিচারপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতি, বিদেশি রাষ্ট্রদূত, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান, বিচারপতি, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ এবং স্বাধীনতাযুদ্ধের বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করবে।
সারাদেশে উদযাপন
ঢাকার বাইরে বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর এবং খুলনার সেনানিবাসে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী ঘাঁটি ও স্থাপনাগুলোতেও দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হচ্ছে।
বিশেষ প্রদর্শনী
দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর বিশেষভাবে সজ্জিত জাহাজগুলো দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বিশেষ ক্রোড়পত্র ও প্রতিযোগিতা
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস এবং শৃঙ্খলা, সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :