রাজধানীর লালমাটিয়ায় শতাধিক নারী মশাল মিছিল করেছেন প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধের দাবিতে। স্থানীয় বাসিন্দারাও এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে মিছিলে যোগ দেন।
মিছিলের আয়োজন ও উদ্দেশ্য
বুধবার (৫ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টায় ‘মোহাম্মদপুরবাসী’ ব্যানারে এই মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশের ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন (২০০৫) কঠোরভাবে বাস্তবায়নের দাবি জানান। তাদের মূল দাবিগুলো হলো:
১. সারাদেশে প্রকাশ্যে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা
২. অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ
৩. তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রিতে কঠোর নজরদারি চালানো
সমাজের জন্য ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব
মিছিলে অংশগ্রহণকারী নারীরা দাবি করেন, লালমাটিয়া এলাকায় মাদকের অবাধ বিস্তার ঘটছে। বিশেষ করে বিভিন্ন বয়সের ছেলে-মেয়েরা প্রকাশ্যে মাদক গ্রহণ করছে, যা শিশু-কিশোরদের বিপথগামী করছে।
সামিনা ইয়াসমিন নামের এক মিছিলকারী বলেন,
“ধূমপানের কারণে নানা ধরনের শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে, প্রকাশ্যে ধূমপানের ফলে শিশু ও সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, সারাদেশে প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হোক এবং মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
আরেকজন মিছিলকারী আমেনা ইসলাম বলেন,
“আমাদের মা-বোনেরা কখনোই যেখানে-সেখানে বসে সিগারেট খেতে পারেন না। এটা আমাদের সংস্কৃতি, ধর্ম ও সমাজের সাথে বেমানান। তাই ধূমপান বন্ধ করা জরুরি।”
শিক্ষার্থী সুমাইয়া ঐশী বলেন,
“আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ধূমপান ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে হলে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”

মিছিলের স্লোগান ও প্রতিবাদ
মিছিল চলাকালে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন, যেমন:
- "নেশাখোরদের আস্তানা, এই বাংলায় হবে না!"
- "ধূমপান নিষিদ্ধ কর, করতে হবে!"
- "তামাক পণ্য চলবে না, চলবে না!"
- "তোমার নেশা, আমার ক্ষতি!"
তারা বলেন, প্রকাশ্যে ধূমপান শুধু ধূমপায়ীদেরই নয়, বরং শিশুসহ অধূমপায়ীদেরও মারাত্মক ক্ষতির মুখে ফেলে।
ধূমপান নিষিদ্ধের কঠোর আইন বাস্তবায়নের দাবি
মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের (২০০৫) আরও কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। তারা বলেন, প্রকাশ্যে ধূমপান সকলের জন্য ক্ষতিকর, তাই এর ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে।অবৈধ মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে এবং তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রিতে সরকারি নজরদারি বাড়াতে হবে।
সামাজিক আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা
এই ধরনের সামাজিক আন্দোলন শুধু রাজধানীতেই সীমাবদ্ধ না রেখে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানান মিছিলকারীরা। তারা মনে করেন, সচেতনতার মাধ্যমে ধূমপান ও মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব। প্রকাশ্যে ধূমপান বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিলে আগামীর প্রজন্মকে ধূমপান ও মাদকের ভয়াল গ্রাস থেকে রক্ষা করা সম্ভব, এমনটাই মনে করেন মিছিলে অংশগ্রহণকারী নারীরা।
আপনার মতামত লিখুন :