ভারতের আদানি পাওয়ার আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ১,৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোদমে চালু করতে সম্মত হয়েছে। গত তিন মাস ধরে এই সরবরাহ আংশিকভাবে সীমিত ছিল। তবে কোম্পানিটি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) ছাড় ও কর সুবিধার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৩১ অক্টোবর আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছিল। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট এবং বিল পরিশোধে দেরির কারণে গত ১ নভেম্বর বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। তবে শীতকালীন নিম্ন চাহিদার কারণে বাংলাদেশের অনুরোধে অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছিল কোম্পানিটি।
কিন্তু সামনে গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। এ অবস্থায় বিপিডিবি’র অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আদানি পাওয়ার আগামী সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ ১,৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করবে।
তবে আদানি পাওয়ার কর ও ছাড় সুবিধার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে, যা কোটি কোটি ডলারের সমতুল্য হতে পারে। মঙ্গলবার উভয় পক্ষের মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং আলোচনা আরও চলবে বলে জানা গেছে।
বিপিডিবি’র এক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, "তারা (আদানি পাওয়ার) এক ডলারও ছাড় দিতে চায় না। আমরা কোনো ছাড় পাইনি। আমরা পারস্পরিক বোঝাপড়া চাই, কিন্তু তারা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) অনুসরণ করছে।"
এদিকে, বিপিডিবি’র চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে কয়েক দিন আগে তিনি রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন, আদানির সঙ্গে এখন আর বড় কোনো সমস্যা নেই এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ শিগগিরই স্বাভাবিক হবে।
বর্তমানে আদানি পাওয়ারকে প্রতি মাসে ৮৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি পরিশোধের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তবে আদানি পাওয়ারের মুখপাত্র রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিক সাড়া দেননি।
গত ডিসেম্বরে আদানি পাওয়ারের এক সূত্র জানিয়েছিল, বাংলাদেশের কাছে কোম্পানিটির প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া রয়েছে। তবে বিপিডিবি’র দাবি, প্রকৃত ঋণের পরিমাণ প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ডলার এবং মূল সমস্যা বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণের পদ্ধতি নিয়ে।
উল্লেখ্য, বিপিডিবি আগেও আদানি পাওয়ারকে কর সুবিধা এবং পূর্ববর্তী ছাড় কর্মসূচি পুনরায় চালুর অনুরোধ করেছিল।
আপনার মতামত লিখুন :