বাংলাদেশ রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় বাবরসহ ৬ জন খালাস, সাজা কমলো ৫ জনের

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২৫, ০৬:৫২ পিএম

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় বাবরসহ ৬ জন খালাস, সাজা কমলো ৫ জনের

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা থেকে খালাস পাচ্ছেন বাবর। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ছয়জন খালাস পেয়েছেন। পাশাপাশি ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ পাঁচজনের সাজা কমানো হয়েছে।

রায় ঘোষণা

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি ২০২৫), বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এই রায়ের মাধ্যমে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল নিষ্পত্তি হয়েছে।

রায়ের প্রধান সিদ্ধান্তসমূহ

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, প্রয়াত মতিউর রহমান নিজামী, সিইউএফএল-এর তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন উদ্দিন তালুকদার, মহাব্যবস্থাপক কে এম এনামুল হক, ডিজিএফআই-এর সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব নুরুল আমিন যাবজ্জীবন সাজা থেকে খালাস পেয়েছেন।

পরেশ বড়ুয়ার সাজা কমিয়ে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, এনএসআই-এর তৎকালীন মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, সাবেক উপপরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন, তৎকালীন পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) সাহাব উদ্দিন আহমেদ এবং হাফিজুর রহমানের সাজা কমিয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। এর আগে, গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে দেওয়া রায়ে বাবরসহ ছয়জনকে ফাঁসির সাজা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছিল।

মতিউর রহমান নিজামীসহ আরও তিনজনের আপিল তাদের মৃত্যুজনিত কারণে পরিসমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। এই তিনজন হলেন: এনএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রহিম, শ্রমিক সরবরাহকারী দ্বীন মোহাম্মদ এবং ট্রলারমালিক হাজি সোবহান।

ঘটনার পটভূমি

২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাটে ১০ ট্রাকভর্তি অস্ত্র আটক করা হয়। এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ ফাঁসির আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, লুৎফুজ্জামান বাবর, ভারতের উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। অস্ত্র আইনে করা পৃথক মামলায় তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছিল।

আপিল ও বিচারিক কার্যক্রম

২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের রায়ের নথি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আপিল করেন। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার পর হাইকোর্ট এ মামলায় নতুন রায় প্রদান করে।

আসামিদের মুক্তি

লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী জানিয়েছেন, আদালতের রায় দ্রুত কেরানীগঞ্জ কারাগারে পৌঁছালে বাবর কারামুক্তি পাবেন।

উপসংহার

১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। হাইকোর্টের এই রায়ে মামলার কার্যক্রমের সমাপ্তি হলেও এর সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে।

 

Link copied!

সর্বশেষ :