বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার পাঁচটি রাবার বাগান থেকে ২৬ শ্রমিককে অপহরণ করেছে সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত দেড়টার দিকে ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি মুরুংঝিরি এলাকা থেকে তাদের তুলে নেওয়া হয়।
কাদের অপহরণ করা হয়েছে?
অপহৃতরা লামার ফোরকান ও শাহজাহান, নুরু মোহাম্মদ কোম্পানি, আহসান উল্লাহ কোম্পানি, হুমায়ুন কোম্পানি ও সোনামিয়া কোম্পানির রাবার বাগানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
অপহৃতদের মধ্যে কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে—
মো. ফারুক (২৬), মো. আইয়ুব আলী (২৬), মো. সিদ্দিক (৪০), মো. আব্দুল খালেক (২০), আব্দুল মাজেদ (১৭), মনিরুল ইসলাম (৩০), জিয়াউর রহমান (৪৫), মো. মোবারক (২৫), মো. হারুল (৩০), সৈয়দ নুর (২৮)
রমিজ উদ্দিন (৩০), মো. কায়ছার (৩৮), মো. মনির হোসেন (৩৫), মো. ইমরান (১৭), মঞ্জুর (৩০), আফসার আলী (২৫), মো. খাইরুল আমিন (৩০), আবু বক্কর (২৯), আবদুর রাজ্জাক (৩৩), মো. মবিন (২৫)
অন্য ছয়জনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। তারা সবাই কক্সবাজারের রামু, ঈদগাহ ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাসিন্দা।
কীভাবে অপহরণ করা হলো?
স্থানীয় সূত্র জানায়—
শনিবার গভীর রাতে সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা পাঁচটি বাগানে হানা দেয়। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ঘর থেকে শ্রমিকদের তুলে নিয়ে যায়।
মুক্তিপণ হিসেবে ৬ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে।
এক বাগান মালিক মো. শাহজাহান জানান—
"কিছুদিন আগে সন্ত্রাসীরা শ্রমিকদের কাছে ৬ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিল। কিন্তু টাকা না পেয়ে তাদের তুলে নিয়ে গেছে। এখন মুক্তিপণ দাবি করছে।"
কর্তৃপক্ষ কী বলছে?
লামা থানার ওসি মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন—
"অপহরণের খবর পেয়েই সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ যৌথ অভিযান শুরু করেছে। তবে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় সন্ত্রাসীরা সুযোগ নিচ্ছে।"
শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মংমেগ্য মার্মা জানান—
"এই অপহরণের ঘটনায় শুধু রাবার শ্রমিক নয়, তামাক, গাছ, পাথর ও বাঁশ শ্রমিকরাও আতঙ্কে রয়েছে। নেটওয়ার্ক না থাকায় বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।"
এর আগেও ঘটেছে অপহরণের ঘটনা
- জানুয়ারি মাসে লামার গজালিয়া ইউনিয়নে রাবার বাগানের এক শ্রমিক ও বাগান ম্যানেজার অপহৃত হন।
- ফেব্রুয়ারির শুরুতে ৬ শ্রমিককে তুলে নেয় সন্ত্রাসীরা।
- মুক্তিপণ ও সেনাবাহিনীর অভিযানের পর অপহৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
আপনার মতামত লিখুন :