গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার তাড়গ্রামে অবস্থিত জেকে পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের পরিবেশবান্ধব শপিং ব্যাগ উৎপাদন শুরু করেছে। প্রতি দিন এই কারখানায় তৈরি হবে প্রায় ২ লাখ পিস বায়ো-ডিগ্রেডেবল ব্যাগ, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক পলিথিনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
২১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে কারখানাটির উৎপাদন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেকে পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান সিকদার কামাল এবং যমুনা টেলিভিশনের গোপালগঞ্জের সিনিয়র রিপোর্টার মোজাম্মেল হোসেন মুন্না।
বায়ো-ডিগ্রেডেবল ব্যাগের বৈশিষ্ট্য
উৎপাদকদের দাবি অনুযায়ী, এই ব্যাগ দেখতে পলিথিনের মতো হলেও এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। বায়ো-ডিগ্রেডেবল পলিমার দিয়ে তৈরি এই ব্যাগ মাটিতে পচে যায় এবং জৈব সার তৈরি করে। পলিথিনের মতো এটি পরিবেশে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না।
উৎপাদন ক্ষমতা ও প্রযুক্তি
কারখানাটিতে কর্ন স্টার্চ ও অন্যান্য উদ্ভিদজাত কাঁচামাল দিয়ে ব্যাগ তৈরির জন্য তিন স্তরের অত্যাধুনিক আমদানি করা মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিদিন এই মেশিনে ১ টন বায়ো-ডিগ্রেডেবল ব্যাগ উৎপাদিত হবে, যা প্রায় ২ লাখ পিস। বিভিন্ন আকারের এই ব্যাগগুলো ১ কেজি থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত ওজনের পণ্য বহনে সক্ষম।
পরিবেশবান্ধব ব্যাগের দাম
এই ব্যাগ তৈরিতে পলিথিনের তুলনায় কিছুটা বেশি খরচ হলেও দাম সাশ্রয়ী রাখা হয়েছে।
- ১ কেজি ধারণক্ষমতার ব্যাগের দাম ১ টাকা।
- ২০ কেজি ধারণক্ষমতার ব্যাগের দাম ১৯ টাকা।
পরিবেশের জন্য ভূমিকা
ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান সিকদার কামাল বলেন, “বর্তমান সরকার ১ নভেম্বর থেকে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করেছে। পলিথিনের কারণে মাটি উর্বরতা হারায়, জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এবং প্রাকৃতিকভাবে মাছ উৎপাদন ব্যাহত হয়। আমরা পরিবেশ সুরক্ষার লক্ষ্যে বায়ো-ডিগ্রেডেবল ব্যাগ উৎপাদন শুরু করেছি। এই ব্যাগের ব্যবহার পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
সচেতনতার বার্তা
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মোজাম্মেল হোসেন মুন্না বলেন, “পলিথিন পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এ ধরনের পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহার করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নির্মল পরিবেশে বসবাস করতে পারবে। আমি আশা করি, দেশের অন্যান্য শিল্প মালিকরাও এ ধরনের উদ্যোগে এগিয়ে আসবেন।”
উপসংহার
জেকে পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজের এই উদ্যোগ পরিবেশের জন্য একটি দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ। কারখানায় উৎপাদিত বায়ো-ডিগ্রেডেবল ব্যাগ দেশব্যাপী ব্যবহার করলে পরিবেশ দূষণ কমবে এবং পলিথিনের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস পাবে।
আপনার মতামত লিখুন :