জীবনে চূড়ান্ত বিপর্যয় থেকে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে রক্ষার জন্য ইসলামে তালাকের বিধান রাখা হয়েছে। উভয়ের মধ্যে বিরোধ যখন চরম পর্যায়ে পৌঁছায়, তখনই আসে তালাকের প্রশ্ন।
তবে মুখে তিন তালাক দিলেই তালাক হবে এমন নয়, তালাক দেয়ার কিছু আইনগত বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। তালাকের নিয়ম না মানলে অনেক জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।
অনেকেই প্রশ্ন করেন– অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে কি তালাক দেয়া যায়? এই তালাক কীভাবে কার্যকর হয় এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তার দায়িত্ব কে নেবে?
গার্ডিয়ানশিপ এন্ড ওয়ার্ড অ্যাক্টএর ১৮৯০ সালের ধারা ১৭ ও উপধারা ২ বলা হয়েছে– সন্তানের বয়স, লিঙ্গ ও ধর্ম বিবেচনা করে কোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে সন্তান কার কাছে থাকবে।
পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ ১৯৮৫ সালের ৫ ধারায় মুসলিম ও হিন্দু আইনে বলা হয়েছে– বাবা হচ্ছেন সামাজিক ও আইনগত অভিভাবক। এ ছাড়া বাবার অনুপস্থিতিতে তার দায়িত্ব নেবে দাদা-দাদি অথবা বাবার পরিবারের সদস্যরা।
দ্যা মেজরটি অ্যাক্ট নামের অপর একটি আইনে বলা হয়েছে– বাবাই হচ্ছেন সন্তানের আইনগত অভিভাবক। সন্তান সাবালক হওয়া পর্যন্ত তার দায়িত্ব নেবেন বাবা।
অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে তালাক
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ এর ধারা ৭ ও উপধারা ৫ এ বলা হয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দেয়া যায়। তবে গর্ভাবস্থায় তালাক দিলে সন্তান ভূমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না।
সন্তানের দায়ভার
জন্মের পর সন্তান সাবালক হওয়া পর্যন্ত তার সব দায়িত্ব নেবেন বাবা। আর জন্মের পর লালন পালনের দায়িত্ব নেবে মা।
ছেলে সন্তান হলে মায়ের কাছে থাকবে সাত বছর, আর মেয়ে সন্তান হলে থাকবে বয়সসন্ধিকাল (১৫ বছর)। তবে কিছু ক্ষেত্রে মা তার লালন-পালনের অধিকার হারাতে পারে।
লেখক: অ্যাডভোকেট আবুল হাসান, সুপ্রিমকোর্ট অব বাংলাদেশ।
আপনার মতামত লিখুন :