বাংলাদেশ রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১

সারাবছর বিটরুট খেতে চান! জেনে নিন সংরক্ষণের সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪, ০২:০৭ পিএম

সারাবছর বিটরুট খেতে চান! জেনে নিন সংরক্ষণের সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি

বিটরুট সংরক্ষণ। ছবি: সংগৃহীত

বিটরুট দেখতে যেমন সুন্দর, পুষ্টিগুণেও তেমন সমৃদ্ধ। রক্তস্বল্পতা দূর করা থেকে শুরু করে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি এবং ত্বকের উন্নতিতে সহায়তা করাই এর কাজ। তবে এটি শীতকালীন ফসল হওয়া সারা বছর এর চাহিদা থাকলেও বাজারে পাওয়া একটু দুষ্কর। তাই সারা বছর ব্যবহার করতে চাইলে একে সংরক্ষণ এর বিকল্প নেই। তবে দীর্ঘদিন এটি ভালো রাখতে হলে সঠিক উপায়ে সংরক্ষণ করা জরুরি। এই আর্টিকেলে আমরা ধাপে ধাপে বিটরুট সংরক্ষণের পদ্ধতি, সুবিধা এবং কিছু কার্যকর টিপস নিয়ে কথা বলবো। 

বিটরুট সংরক্ষণের পদ্ধতিসমূহ

১. রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ :

বিটরুট সংরক্ষণ করার প্রথম পদ্ধতি হলো রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ। এই পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে চাইলে প্রথমে বিটরুট ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। এতে ধুলাবালি এবং কোনো ব্যাকটেরিয়া থাকলে তা দূর হয়। যদি বিটরুটে কোনো দাগ বা ক্ষতিগ্রস্ত অংশ থাকে, তা ছেঁটে ফেলতে হবে। এরপর বিটরুটকে আস্ত অবস্থায় অথবা টুকরো করে প্লাস্টিকের ব্যাগ বা এয়ারটাইট কন্টেইনারে ভরে রেফ্রিজারেটরে রাখতে হবে। এই পদ্ধতিতে বিটরুট ২-৩ সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকে।

বিটরুট কেটে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ

২. ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ :

বিটরুট সংরক্ষণের দ্বিতীয় এবং দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতিটি হলো ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ। বিটরুট টুকরো করে বা আস্ত অবস্থায় সংরক্ষণ করা হয়। এরপর বিটরুট এয়ারটাইট পাত্রে রেখে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে। ডিপ ফ্রিজে রাখা বিটরুট ৬ মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। এছাড়াও আদা রসুনের মত বেলেন্ডারে পেস্ট করেও এয়ারটাইট পাত্রে রেখে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায়। 

৩. শুকিয়ে সংরক্ষণ :

তৃতীয় পদ্ধতিতে বিটরুট শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। প্রথমে বিটরুট টুকরো করে কেটে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। শুকনো বিটরুট ব্লেন্ডারে গুঁড়ো করে পাউডার তৈরি করতে হবে। এই পাউডার সারা বছর সংরক্ষণ করা যায় এবং এটি সহজেই বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার করা যায়।

৪. পিকল তৈরি করে সংরক্ষণ :

চতুর্থ পদ্ধতিটি হলো পিকল তৈরির মাধ্যমে সংরক্ষণ। বিটরুটকে টুকরো করে ভিনেগার, নুন, চিনি এবং মশলার মিশ্রণে সংরক্ষণ করা হয়। এটি সুস্বাদু একটি খাবার এবং ৬ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।

বিটরুট সংরক্ষণের আরও কিছু টিপস

বিটরুট কেনার সময় তাজা এবং গাঢ় লাল রঙের বিট কিনতে হবে। সংরক্ষণের আগে বিটরুট সবসময় ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। এয়ারটাইট পাত্র ব্যবহার করলে বাতাস ঢুকবে না এবং পচনের সম্ভাবনা কমে যাবে। বিটরুটে কোনো ক্ষতিগ্রস্ত অংশ থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে হবে কারন অল্প নষ্ট অংশ পুরো বিটরুটই নষ্ট করতে পারে। রেফ্রিজারেটরে ০-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ডিপ ফ্রিজে -১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা সবচেয়ে কার্যকর।

বিটরুট পাউডার তৈরির ধাপ

বিটরুট পাউডার করতে চাইলে প্রথমে বিট পরিষ্কার করে ভালোভাবে ধুয়ে পাতলা স্লাইস করে নিতে হবে। তারপর রোদে শুকানো বা ফুড ডিহাইড্রেটর ব্যবহার করে রুটবিট শুকিয়ে নিতে হবে। শুকানো বিট ব্লেন্ডারে গুঁড়ো করে এটি এয়ারটাইট কন্টেইনারে রেখে শীতল ও শুকনো স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে।

বিটরুট সংরক্ষণের সুবিধা

বিভিন্ন পদ্ধতিতে বিটরুট সংরক্ষণ করলে এটি সারা বছর ব্যবহার করা যায়। সঠিক উপায়ে সংরক্ষণ করলে বিটরুটের ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মান অক্ষুণ্ণ থাকে। সংরক্ষিত বিটরুট স্যুপ, স্মুদি, সালাদ, কেক, এবং ব্রেড তৈরিতে ব্যবহার করা যায়।

উপসংহার

বিটরুট সংরক্ষণ করা একটি সহজ প্রক্রিয়া যদি সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এটি শুধুমাত্র বিটরুটের ব্যবহার বাড়ায় না বরং এর পুষ্টিগুণও ধরে রাখে। রেফ্রিজারেটরে রাখা, শুকিয়ে গুঁড়ো তৈরি করা বা পিকল করে সংরক্ষণ, সব পদ্ধতিই কার্যকর এবং সহজ। তাই আপনার প্রয়োজন এবং ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী সেরা পদ্ধতিটি বেছে নিন এবং সারা বছর বিটরুটের পুষ্টি উপভোগ করুন।

 

Link copied!

সর্বশেষ :