শীতকাল আর খেজুরের রস কিংবা খেজুরের গুড় যেন হরিহর আত্মা। তাই এই শীতে ঘরে খেজুর গুড় আর মুড়ির মোয়া হবে না তা কখনো হয়! মুড়ির মোয়া বাঙালি ঐতিহ্যের এক মজাদার খাবার, যা উৎসব কিংবা সাধারণ বিকেলের নাশতায় বেশ জনপ্রিয়। শুধু মুড়ি নয়, খেজুর গুড়ের সাথে তাল মেলাতে পারে চিড়া, তিল কিংবা খই, আর আমরাও খেতে পারি ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের মোয়া। তো চলুন, আজ জেনে নেওয়া যাক খেজুর গুড় দিয়ে মুড়ির মোয়া তৈরির ঘরোয়া রেসিপি।
উপকরণ:
১. মুড়ি – ৫০০ গ্রাম
২. খেজুরের গুড় – ২৫০ গ্রাম
৩. পানি – সামান্য
৪. ঘি – ১ টেবিল চামচ (মোয়া গোল করার জন্য)
প্রস্তুত প্রণালি:
১. গুড়ের শিরা তৈরি করা
গুড় যদি বাটালি হয় তবে প্রথমেই পরিমান মত গুড় আলতো করে ভেঙ্গে ছোট করে নিতে হবে। আর গুড় যদি ঘরে তৈরি পাতলা গুড় হয় তবে ২৫০ গ্রাম মেপে নিতে হবে।
এরপর একটি কড়াই বা সসপ্যান মাঝারি আঁচে চুলায় বসিয়ে দিন। এতে সামান্য পানি দিয়ে গুড় ঢেলে দিন যাতে বাটালিটা সহজেই গলতে পারে। (পাতলা গুড় হলে পানি দেয়ার প্রয়োজন নেই) যতক্ষন না পর্যন্ত গুড় গলে গিয়ে শিরায় পরিনত হয় ততক্ষণ নাড়তে থাকুন।
শিরা তৈরি হয়েছে কিনা পরীক্ষা করতে শিরার ওপর সামান্য পানি ছিটিয়ে দেখতে পারেন, যদি গুড় আঠালো বা শক্ত হয়ে যায় তবে বুঝতে হবে শিরা তৈরি হয়েছে।
২. মুড়ি মেশানো
শিরা তৈরি হলে এতে মুড়ি ঢেলে দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে মিশিয়ে নিন। মুড়ি ও গুড় একে অপরের সাথে ভালোভাবে মিশে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে নিন।
৩. ঠান্ডা হওয়ার অপেক্ষা করা
মুড়ি ও গুড়ের মিশ্রণটি একটু ঠান্ডা করে নিন, তবে মনে রাখবেন পুরোপুরি ঠান্ডা হয়ে গেলে মোয়া গোল করা সম্ভব নয়, তাই মিশ্রণটি হালকা গরম থাকতে থাকতে হাত দিয়ে গোল করে নিতে হবে।
৪. মোয়া বানানো
হাতের তালুতে সামান্য ঘি মাখিয়ে নিন। এতে গুড় হাতের সাথে লেগে থাকবে না। এরপর সহ্য করার মত হালকা গরম মিশ্রণটি হাতে নিয়ে চেপে চেপে গোল আকৃতির মোয়া বানিয়ে ফেলুন। গুড়ের লালচে রঙ্গের কারনে মোয়ার রঙ্গটাও আসবে দারুন।
৫. পরিবেশন ও সংরক্ষন
ব্যাস রেসিপি এই পর্যন্তই শেষ। এবার পরিবেশনের পালা। বিকালের নাস্তা হোক কিংবা এমনি সময়, মুচমুচে মোয়া খেতে পারেন যেকোনো সময়। চাইলে ঠান্ডা হওয়ার পরে এয়ার টাইট বক্সে সংরক্ষণও করতে পারবেন কিছুদিন।
স্পেশাল টিপস:
- আপনি চাইলে মুড়ির পরিবর্তে চিড়া, খই বা তিলও ব্যবহার করতে পারেন।
- মুড়ি ও গুড়ের পরিমাণ আপনার স্বাদ অনুযায়ী বাড়াতে বা কমাতে পারেন।
এভাবে খুব সহজে এবং কোনো ঝামেলা ছাড়া ঘরেই বানিয়ে নিতে পারেন সুস্বাদু এবং ঐতিহ্যবাহী বাঙালি মিষ্টি।
আপনার মতামত লিখুন :