ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আবারো ভুয়া নারী চিকিৎসক আটক হয়েছেন। রোববার (১৭ নভেম্বর ২০২৪) দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে পুরাতন ভবনের নাক-কান-গলা বিভাগ থেকে পাপিয়া আক্তার স্বর্ণা (৩০) নামে ওই নারীকে আনসার সদস্যরা আটক করেন।
আটকের পেছনের ঘটনা
আনসার সদস্যরা নিয়মিত টহলের সময় নাক-কান-গলা বিভাগে এক মেডিকেল শিক্ষার্থীর মাধ্যমে জানতে পারেন, একজন নারী চিকিৎসকের এপ্রোন পরে ঘোরাফেরা করছেন, যার নাম ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে মিলে যায়। বিষয়টি সন্দেহ হলে আনসার সদস্যরা দ্রুত ওয়ার্ডে গিয়ে উপস্থিত চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। চিকিৎসকরা জানান, ওই নারী তাদের কেউ নন।
এরপর আনসার সদস্যরা অভিযুক্ত নারীকে প্রশাসনিক ভবনে নিয়ে যান এবং ঢামেকের পরিচালক ও উপপরিচালকের কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানান। তাদের নির্দেশনায় পাপিয়া আক্তার স্বর্ণাকে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ফারুকের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
অভিযুক্ত নারীর পরিচয় ও বক্তব্য
পাপিয়া আক্তার স্বর্ণা জানান, তিনি নরসিংদীর মনোহরদী সদরের হাররদিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে এবং বর্তমানে ঢাকার বকশীবাজারে ভাড়া বাসায় থাকেন। তিনি দাবি করেন, পূর্বপরিচিত এক রোগীকে চিকিৎসা করাতে হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগে এসেছিলেন।
চিকিৎসকের এপ্রোন পরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এপ্রোনটি একটি টেইলার্সে বানিয়েছেন এবং এমন কাজ করা তার ভুল হয়েছে। ভবিষ্যতে তিনি এ ধরনের কাজ আর করবেন না বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।
আনসার কমান্ডারের বক্তব্য
আনসারের প্লাটুন কমান্ডার মিজানুর রহমান জানান, অভিযুক্ত নারীকে ওয়ার্ডে দেখে চিকিৎসকরা তাকে চিনতে পারেননি। সন্দেহ আরও গাঢ় হলে তাকে হাসপাতালে উচ্চপদস্থ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হাসপাতালের নির্দেশেই তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
পূর্বের মুনিয়ার ঘটনা
এর আগেও ঢামেক হাসপাতালে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। ২০২৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুনিয়া রোজা (২৫) নামে এক ভুয়া গাইনিকোলজিস্টকে আনসার সদস্যরা আটক করেন। হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসকের পরিচয়ে ঢুকে পড়ার সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছিল।
উপসংহার
বারবার এমন ঘটনা ঢামেকের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার প্রতি প্রশ্ন তোলে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভুয়া চিকিৎসকদের চিহ্নিত করতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :