২০২১ সালে জাপানি গবেষকেরা প্রথমবারের মতো বরফ বলের আকৃতির দুইটি অদ্ভুত বস্তু শনাক্ত করেন। এই বস্তুগুলো সূর্যের আলো প্রতিফলিত করছে এমন এক অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে সাধারণত তারারা গঠিত হয় না। নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে, এই বস্তুগুলো থেকে আসা আলো কোনো পরিচিত উৎসের সঙ্গে মেলে না। যদিও বস্তুগুলোকে গ্যাসের ঘন মেঘ বা সদ্য গঠিত নক্ষত্রের মতো মনে হতে পারে, তবে সেগুলো ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য ধারণ করে।
জাপানের আকারি স্পেস টেলিস্কোপ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা এই বস্তুগুলো আসলে আকাশগঙ্গার দুই ভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত। একটি বস্তু আমাদের সূর্য থেকে প্রায় ৩০ হাজার আলোকবর্ষ দূরে ক্রাক্স-স্কুটাম আর্ম নামের এলাকায় অবস্থান করছে। অন্যটি, সূর্য থেকে প্রায় ৪৩ হাজার আলোকবর্ষ দূরে ক্যারিনা-স্যাগিটেরিয়াস আর্মে। এই দুই রহস্যময় বস্তু একে অপরের তুলনায় খুব কাছাকাছি হলেও তাদের অবস্থান বেশ অস্বাভাবিক।
চিলির আতাকামা লার্জ মিলিমিটার/সাবমিলিমিটার অ্যারে টেলিস্কোপ (ALMA) দিয়ে এই বস্তু দুটি আরও বিস্তারিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। গবেষকদের মতে, বস্তুগুলো আমাদের সৌরজগতের আকারের চেয়েও কয়েকগুণ বড়। সেগুলো থেকে নির্গত আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বলছে যে বস্তু দুটি কার্বন মনোক্সাইড ও সিলিকন ডাই-অক্সাইড দ্বারা গঠিত।
যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী জেন গ্রিভস এ বিষয়ে বলেন, “দুটি বস্তুর মধ্যে পরস্পরবিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একদিকে প্রচুর পরিমাণে বরফের উপস্থিতি, যা পর্যাপ্ত ঠান্ডার কারণে সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে বস্তুগুলো থেকে তারার মতো ইনফ্রারেড আলো নির্গত হচ্ছে, যা একটি বিরল ঘটনা।”
গবেষকরা আশা করছেন, ভবিষ্যৎ পর্যবেক্ষণ এবং উন্নত টেলিস্কোপের সাহায্যে এই বরফ বলের রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে। এই আবিষ্কার মহাকাশবিজ্ঞানের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :