আজ (২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪) দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। ১৮১ জন আরোহী বহনকারী জেজু এয়ারের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এবং তৎক্ষণাৎ আগুন ধরে যায়। ঘটনায় মাত্র দু’জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, বাকিদের সবাই নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার বিবরণ
জেজু এয়ারের ফ্লাইটটি থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ১৭৫ জন যাত্রী এবং ৬ জন ক্রু নিয়ে মুয়ানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সকাল ৯টার দিকে (স্থানীয় সময়) বিমানটি মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করে। ল্যান্ডিংয়ের সময় বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এবং একটি দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে আগুন ধরে যায়।
উদ্ধার কার্যক্রম
দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিস এবং উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করতে শুরু করেন। এ কাজে প্রায় ৮০ জন ফায়ারফাইটার এবং ৩০টি ফায়ার ট্রাক অংশ নেয়। তীব্র আগুন ও ধোঁয়ার কারণে উদ্ধার কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটলেও উদ্ধারকর্মীরা পেছনের অংশ থেকে একজন যাত্রী এবং একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হন।
নিহত ও বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা
বিমানটির ১৭৫ যাত্রী ও ৬ ক্রুর মধ্যে মাত্র ২ জনকে জীবিত পাওয়া গেছে। যাত্রীদের মধ্যে ১৭৩ জন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক এবং ২ জন থাই নাগরিক ছিলেন।
দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ
দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এবং বিমান বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, পাখির সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটি দেখা দেয়। এই ত্রুটির ফলে বিমানটি রানওয়েতে অবতরণের সময় ভারসাম্য হারায় এবং দুর্ঘটনা ঘটে। তবে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ নির্ধারণে তদন্ত চলছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান সুরক্ষা রেকর্ড
দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান পরিবহন ব্যবস্থা সাধারণত নিরাপদ বলে পরিচিত। জেজু এয়ার, যা ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, এর আগে এমন কোনো বড় দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়নি। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা দেশটির বিমান সুরক্ষা ব্যবস্থার ওপর বড় ধরনের প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনা
সম্প্রতি কাজাখস্তানে আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের একটি বিমান দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত হয়েছিলেন। এই ঘটনা এবং মুয়ানের আজকের দুর্ঘটনা আবারও বিমান পরিবহনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
শেষ কথা
মুয়ানের এই বিমান দুর্ঘটনা দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ একটি ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। উদ্ধার কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে। দুর্ঘটনার সঠিক কারণ নির্ধারণ এবং এ ধরনের বিপর্যয় রোধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :