বিশ্বব্যাপী বাড়ছে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মৃত্যুর সংখ্যা। বিশেষ করে গত এক দশকে ইউরোপসহ উন্নত দেশগুলোতে অভিবাসনের আশায় করুণ মৃত্যু হয়েছে ৬৩ হাজারেরও বেশি জনের।মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অরগ্যানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) এ তথ্য জানিয়েছে।
গত এক দশকে বিশ্বব্যাপী বেড়েছে যুদ্ধ ও সংঘাত। সেই সঙ্গে বেড়েছে উদ্বাস্তু ও গৃহহীন মানুষের সংখ্যাও। নিজেদের জীবন বাঁচাতে কিংবা ভবিষ্যতে একটু সুখে থাকার আশায় দরিদ্র দেশের অনেকেই বেছে নেয় অনিয়মিত ও অনিরাপদ অভিবাসন ব্যবস্থাকে।
দালালদের নানা প্রলোভনে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য কিংবা জার্মানিসহ ইউরোপের নানা দেশে ঢুকতে এদের ভয়ংকর সব নদ-নদী ও বন-জঙ্গলের পাশাপাশি পাড়ি দিতে হয় বিপদসংকুল ভূমধ্যসাগর। এর মধ্যে দু-একজন অভিবাসনপ্রত্যাশী কাঙ্ক্ষিত দেশে পৌঁছাতে পারলেও অনাহারে অথবা অতিমাত্রায় ঠান্ডা ও অসুখ-বিসুখে বেশিরভাগই হারিয়ে যান চিরতরে।
মঙ্গলবার আইওএম জানায়, যতই দিন যাচ্ছে অভিবাসীদের নিখোঁজ বা মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটি আরও জানায়, তাদের হারিয়ে যাওয়া অভিবাসী প্রকল্প বা মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রোজেক্টে শুধুমাত্র ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত নিঁখোজ বা মৃত্যুবরণ করেছে এমন অভিবাসীর সংখ্যা ৬৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। যদিও এ সংখ্যাটির চেয়ে আরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা সংস্থাটির।
তবে ইতালি, গ্রিস ও জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ঢোকার নানা রাস্তা থাকলেও প্রায় ৬০ ভাগ অর্থাৎ ২৮ হাজারেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে লিবিয়া উপকূলে ভূমধ্যসাগরের উত্তাল জলরাশিতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ যুক্তরাষ্ট্র আর মেক্সিকো সীমান্তে। আর আটলান্টিক মহাসাগর ও এডেন উপসাগর ছাড়াও বঙ্গোপসাগরে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের মৃত্যুর বিষয়টিও তুলে ধরে সংস্থাটি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিবাসীদের সংখ্যা বাড়ার বড় কারণ নিজ দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা ও গৃহযুদ্ধ। সেই সঙ্গে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অনিরাপদ যাত্রা ঠেকাতে নজরদারি আরও বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে ইউরোপের মানবিক সংস্থাগুলো।
আপনার মতামত লিখুন :