বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টায় মিয়ানমার সীমান্তে ২০০রও বেশি জান্তা সদস্য

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২৪, ১২:৫৫ এএম

বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টায় মিয়ানমার সীমান্তে ২০০রও বেশি জান্তা সদস্য

গত সপ্তাহে শূন্য রেখায় একটি চা বাগানে আশ্রয় নিয়েছিলেন কিছু মিয়ানমারের নাগরিক

বাংলাদেশ সীমান্তরেখা থেকে সরে গেছে মিয়ানমারের জান্তা নিয়ন্ত্রিত বাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যকার সংঘাতের স্থল। তবুও জান্তা বাহিনীর অন্তত ১৭৯জন সদস্য গত সপ্তাহে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন।

এমন আরও দুই শতাধিক সদস্য কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছেন বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিরা।

যদিও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেছেন, এমন কোনও তথ্য তার জানা নেই।

ফেব্রুয়ারিতে সীমান্ত চৌকিগুলোতে আরাকান আর্মির অভিযানের তীব্রতায় টিঁকতে না পেরে বাংলাদেশ পালিয়ে এসেছিলেন মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ বা বিজিপি-র সদস্যরা। পরে অবশ্য তাদের সবাইকে ফেরত পাঠানো হয়।

সীমান্তের অপর পাশে দুই পক্ষের সংঘাতে কাছাকাছি থাকা বাংলাদেশের গ্রামগুলোতেও হতাহতের ঘটনা ঘটে।

সেবার ঘটনার কেন্দ্রস্থল ছিল ঘুমধুম সীমান্ত। এবারে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন হয়ে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে।

গত সপ্তাহে আসা ১৭৯ জন বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি-র হেফাজতে রয়েছেন। তাদের রাখা হয়েছে বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

রোববার যারা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন বলে জানা যাচ্ছে বিজিবি-র কঠোর প্রহরার কারণে তারা আর পেরে ওঠেননি।

নাইক্ষ্যংছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবসার বিবিসি বাংলাকে বলেন, “বেশ কয়েকদিন পর গতকাল গোলাগুলির শব্দ শোনা গিয়েছিল। কিছু লোক আসার চেষ্টা করছিল, কিন্তু আসতে পারে নাই। কারণ, বিজিবি পাহারায় ছিল।”

 

মি. আবসার জানান, প্রথম দফায় আসেন ২৯ জন, দ্বিতীয় দফায় ১৫০ জন।

সাংবাদিক মি. আহমেদের তথ্য অনুযায়ী এদের মধ্যে দু’জন দোভাষীও রয়েছেন।

প্রথমে সীমান্তের শূন্য রেখায় একটি চা বাগানে আশ্রয় নিয়েছিলেন মিয়ানমারের এই নাগরিকরা।

নুরুল আবসার জানান, সেখানে গিয়ে বিজিবি সদস্যরা তাদের নিরস্ত্র করেন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরবর্তীতে তাদের নিয়ে আসা হয় বর্ডার গার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসাদের নিরাপত্তা, খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা বিজিবি-র তরফেই করা হচ্ছে।

সীমান্ত থেকে সরেছে সংঘাত

গত দোসরা ফেব্রুয়ারি থেকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের বিজিপির সংঘর্ষ শুরু হয়।

জান্তা বাহিনীর দখলে থাকা সীমান্ত চৌকিগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয় বিদ্রোহীরা।

এর জেরে ৪ঠা থেকে ৭ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন বিজিপি-র ৩০২জন সদস্যসহ মোট ৩৩০ জন।

বিজিবি-র ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে জানান, "ফেব্রুয়ারির পর আর ওই সীমান্ত দিয়ে কোনও বিজিপি সদস্য প্রবেশ করেননি।"

রাখাইন রাজ্যের অভ্যন্তরে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল বলে এখন দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগও নেই।

সপ্তাহ দুয়েক হল গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি জানিয়ে ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, গত কয়েকদিন তারা দূরে সংঘর্ষের আওয়াজ পাচ্ছেন।

"সংঘাত চলছে মংডু শহরের কাছাকাছি। বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে খানিকটা দূরে অবস্থিত এই শহরতলি", বলছিলেন তিনি।

Link copied!

সর্বশেষ :