ভারতের নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য অবশেষে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দিল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় ওই তথ্য জমা দেওয়ার সময় সীমা বেঁধে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট ওই বন্ড বাতিল করার কথা ঘোষণা করে।
একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামে টাকা দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত মাধ্যম নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট তথ্য ৬ই মার্চের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিল ভারতের শীর্ষ আদালত।
বলা হয়েছিল ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যত বন্ড কিনেছে, তার পরিমাণ কত এবং সেই বন্ড কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, সেই সমস্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে।
কিন্তু এই প্রক্রিয়াটি সময় সাপেক্ষ, এই বিষয়টি উল্লেখ করে আদালতে কাছে সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০শে জুন করার আর্জি জানিয়েছিল ওই ব্যাঙ্ক।
কিন্তু সোমবার স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার আর্জি খারিজ করে আজ (মঙ্গলবার) বিকেল ৫টার মধ্যে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
অন্যথায় ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে বলেও জানানো হয়েছিল।
এরপরই মঙ্গলবার সেই তথ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দেয় ব্যাঙ্কটি।
ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের বার বেঞ্চের প্রেসিডেন্ট আদিশ আগারওয়ালা প্রেসিডেন্সিয়াল রেফারেন্স চেয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি লিখেছেন মঙ্গলবার।
এবং রাষ্ট্রপতির মতামত না আসা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কার্যকর না করারও আর্জিও জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনী বন্ড রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুদান দেওয়ার একটি মাধ্যম যা ভারতের যে কোনও নাগরিক বা সংস্থা স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নির্বাচিত শাখাগুলি থেকে কিনতে পারেন এবং পছন্দের যে কোনও রাজনৈতিক দলকে বেনামে দান করতে পারেন।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে চালু হওয়া এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিগত কয়েক বছরে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি।
এদিকে লোকসভা নির্বাচনের আগে নিজেদের ভাবমূর্তি ধরে রাখতে বিজেপি চায় না নির্বাচনী বন্ডের তথ্য সামনে আসুক - এই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিরোধীরা।
পিটিশনার এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, বেনামে কোনও ব্যক্তি বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনুদান পেয়ে এসেছে ক্ষমতাসীন দল।
যদিও কালো টাকার লেনদেন রুখতেই নির্বাচনী বন্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবি করেছিল কেন্দ্র সরকার।
আপনার মতামত লিখুন :