বাংলাদেশ শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আততায়ীর গুলিতে নিহত ভারতের মহারাষ্ট্রের সাবেক মন্ত্রী বাবা সিদ্দিক

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৪, ১০:১৬ এএম

আততায়ীর গুলিতে নিহত ভারতের মহারাষ্ট্রের সাবেক মন্ত্রী বাবা সিদ্দিক

বাবা সিদ্দিক। ছবি: ইন্টারনেট

ভারতের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা ও মহারাষ্ট্রের সাবেক মন্ত্রী বাবা সিদ্দিক (৬৬) আততায়ীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। শনিবার রাতে মুম্বাইয়ের বান্দ্রা পূর্ব এলাকার নির্মল নগরের কোলগেট মাঠের কাছে তাঁর ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার আগমুহূর্তে ছেলে জিশান সিদ্দিকের অফিস থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন ঠিক সেই মুহূর্তে আততায়ীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে লীলাবতী হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু ঘটে।

পুলিশ জানায়, হামলার সঙ্গে তিন ব্যক্তি জড়িত ছিল। সন্দেহভাজন দুইজনকে আটক করা হলেও তৃতীয়জন পালিয়ে গেছেন। আটককৃতরা উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। হত্যার কারণ সম্পর্কে পুলিশ এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে বাবা সিদ্দিকের পেটে তিনটি গুলি লেগেছিল বলে জানা গেছে।

সিদ্দিকের মৃত্যুর ঘটনায় মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী ও এনসিপির প্রধান অজিত পাওয়ার বলেছেন, "এ ঘটনা আমাকে হতবাক করেছে। আমি একজন ভালো বন্ধু ও সহকর্মীকে হারালাম। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য তাঁর অবদান ছিল অসামান্য।" তিনি আরও জানান, এ হত্যাকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হবে।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে জানান, অভিযুক্তদের মধ্যে দুই বন্দুকধারীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মুম্বাই পুলিশ কমিশনার বিবেক ফাঁসালকারের বরাতে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, তৃতীয় অভিযুক্তকে ধরতে অভিযান চলছে।

বাবা সিদ্দিক মহারাষ্ট্রের বান্দ্রা পশ্চিম থেকে তিনবার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত খাদ্য ও বেসামরিক সেবা সরবরাহ এবং শ্রম প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। প্রায় পাঁচ দশকের রাজনৈতিক জীবনে তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি কংগ্রেস ত্যাগ করে এনসিপিতে যোগ দেন।

বাবা সিদ্দিকের মৃত্যুতে ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন। বিরোধী দলগুলো মহারাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এনসিপির কার্যনির্বাহী সভাপতি প্রফুল প্যাটেল বলেন, "এ ঘটনায় আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।" এছাড়াও কংগ্রেস নেতা রমেশ চেন্নিথালা এক্সে এক পোস্টে লেখেন, "এই ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। যুব কংগ্রেস থেকে রাজনীতিতে আমাদের একসঙ্গে পথচলা শুরু।"

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ ও কংগ্রেস নেতা বিজয় ওয়াডেত্তিওয়ার মহারাষ্ট্র সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন। তাঁরা জানান, "ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পাওয়া একজন নেতাকে এভাবে গুলি করে হত্যা করা অত্যন্ত ভয়ংকর"।উল্লেখ্য, ‘ওয়াই’ ক্যাটাগরি হলো ভারতের চতুর্থ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, যা ১১ সদস্যের একটি টিমের দ্বারা পরিচালিত হয়।

বাবা সিদ্দিক কেবল রাজনীতিবিদই নন, তিনি বলিউডের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ২০১৩ সালে তাঁর আয়োজিত পার্টিতে শাহরুখ খান ও সালমান খানের মধ্যকার বিরোধ মিটমাট হয় যা বলিউড ইতিহাসে স্মরণীয় ঘটনা হয়ে আছে।

সূত্র: পিটিআই

Link copied!

সর্বশেষ :