বাংলাদেশ শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ট্রাম্পের ‘গাজা খালি’ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আরব দেশগুলোর কঠোর অবস্থান

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫, ১২:৪৭ এএম

ট্রাম্পের ‘গাজা খালি’ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আরব দেশগুলোর কঠোর অবস্থান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘গাজা খালি’ পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন পাঁচ আরব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ফিলিস্তিনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তাঁরা এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে একটি যৌথ চিঠি দিয়েছেন, যা গতকাল সোমবার পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন জর্ডান, মিসর, সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হুসেইন আল-শেখও এই চিঠিতে সই করেছেন।

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরানোর প্রস্তাব

প্রথমবারের মতো গত ২৫ জানুয়ারি ট্রাম্প ‘গাজা খালি’ করার প্রস্তাব দেন। তাঁর মতে, গাজার ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নিয়ে জর্ডান ও মিসরে রাখা উচিত। এ বিষয়ে ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হলে, এটি স্বল্পমেয়াদি নাকি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, তিনি অস্পষ্টভাবে উত্তর দেন—‘হতে পারে।’

ফিলিস্তিনিরা বহু বছর ধরে আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন যে, তাদের স্থায়ীভাবে নিজেদের ভূমি থেকে বিতাড়িত করা হতে পারে। ট্রাম্পের সাম্প্রতিক প্রস্তাব সেই আশঙ্কাকে আরও উসকে দিয়েছে।

আরব বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

সমালোচকেরা ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে ‘জাতিগত নির্মূলের’ প্রচেষ্টা বলে চিহ্নিত করেছেন।

জর্ডান, মিসরসহ অন্যান্য আরব দেশ স্পষ্টভাবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে দেওয়া যৌথ চিঠিতে তারা বলেছে, গাজার পুনর্গঠনের কাজ গাজার বাসিন্দাদের সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে হওয়া উচিত।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ফিলিস্তিনিদের তাঁদের নিজ ভূমি থেকে সরিয়ে নেওয়া উচিত নয়। বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় গাজার পুনর্গঠনের নেতৃত্বও তাদের হাতেই থাকা উচিত।

গাজায় চলমান মানবিক সংকট

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজাভিত্তিক স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর থেকেই গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ সামরিক অভিযান চলছে। ১৫ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে গাজা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় ৪৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং লাখো মানুষ আহত হয়েছেন। গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে, যদিও ইসরায়েল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত ১৯ জানুয়ারি প্রথম ধাপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে এটি অত্যন্ত ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। যুদ্ধবিরতির মধ্যেই আরব বিশ্ব গাজা সংকটের একটি টেকসই সমাধানের দাবি জানিয়ে আসছে, যা ফিলিস্তিনিদের ভূমিতে টিকে থাকার অধিকারকে নিশ্চিত করবে।

Link copied!

সর্বশেষ :