বাংলাদেশ রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রে ৯৫৬ অভিবাসী গ্রেপ্তার: আতঙ্কে স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে শিশুরা, কাজ বন্ধ বহু মা-বাবার

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৫, ১০:১১ এএম

যুক্তরাষ্ট্রে ৯৫৬ অভিবাসী গ্রেপ্তার: আতঙ্কে স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে শিশুরা, কাজ বন্ধ বহু মা-বাবার

অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের টাকসন শহর থেকে রোববার এক অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের বের করে দিতে শুরু হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর ঝটিকা অভিযান। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের নির্দেশে গত রোববার থেকে দেশজুড়ে শুরু হওয়া এই অভিযানে অংশ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) জানায়, অভিযানের প্রথম দিনেই ৯৫৬ জন অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আইসিইর পাশাপাশি এফবিআই, ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিইএ), এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় সংস্থার সদস্যরাও এই অভিযানে যোগ দিয়েছেন। কর্মকর্তাদের ধারণা, এই অভিযান চলবে অন্তত এক সপ্তাহ।

অভিবাসীদের জীবনযাত্রায় প্রভাব

শিকাগোর মতো শহরগুলোতে এই অভিযান বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা স্থানীয় সংগঠনগুলো জানিয়েছে, এই অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে বহু শিশু স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। তাদের পরিবারও আতঙ্কে কাজ বন্ধ রেখেছে।

শিকাগোর শহরতলির এক পরিবার জানিয়েছে, তাদের দুই সন্তান ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসনবিরোধী নীতির কারণে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মা-বাবাও আতঙ্কে কাজ বন্ধ করেছেন।

জাতীয় নিরাপত্তা বনাম মানবাধিকার

আইসিই জানিয়েছে, প্রতিদিন গড়ে ৭৫ জন অভিবাসীকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই তথ্য অস্বীকার করেছেন আইসিইর সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টম হোম্যান। তিনি বলেন, “এই অভিযান আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার একটি অংশ।”

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযানের এই নীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত চলমান এই অভিযানের প্রভাবে লাখ লাখ অভিবাসী আতঙ্কিত।

শিকাগোর বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের টার্গেট

শিকাগোতে অভিবাসীদের সুরক্ষার বিষয়টি ট্রাম্প প্রশাসনের বিরাগভাজন হয়েছে। এ কারণে শহরটির বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় অভিবাসী অধিকার সংগঠনগুলো আদালতে মামলা করে বলেছে, এই অভিযান যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান লঙ্ঘন করছে। সংবিধানের প্রথম সংশোধনী অনুযায়ী বাক্স্বাধীনতা এবং চতুর্থ সংশোধনী অনুযায়ী অযৌক্তিক তল্লাশি ও আটকের বিরুদ্ধে যে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে, তা লঙ্ঘিত হচ্ছে।

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকট

অলাভজনক সংগঠন ইউএস কমিটি ফর রিফিউজিস অ্যান্ড ইমিগ্র্যান্টসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এনা মারিয়া বেনা বলেছেন, “শিশুরা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। তারা অভিভাবকদের কাছ থেকে শুনেছে অভিযান সম্পর্কে। এই ভয়ের মধ্যে বড় হওয়া শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে।

Link copied!

সর্বশেষ :