রোববার, ২৪ নভেম্বর রাতে লেবাননের ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে ৩৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এই হামলা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চল, তেল আবিব এবং এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ঘটনায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন, আর তেল আবিবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তারা প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের আশদদ নৌঘাঁটিতে ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে। এ ছাড়া অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে তেল আবিবের একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তু এবং তেল আবিবের উপকণ্ঠে অবস্থিত গ্লিলট সেনাবাহিনী গোয়েন্দা ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে।
এ ঘটনায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হামলার সময় উত্তরাঞ্চল, তেল আবিব এবং কেন্দ্রীয় এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বিমান হামলা প্রতিরোধ সাইরেন বাজানো হয়। বাহিনীর পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, লেবানন থেকে ছোড়া ২৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হয়েছে। তবে পরে রেডিও প্রতিবেদনে জানানো হয়, মোট ৩৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।
হামলায় ইসরায়েলে ১১ জন আহত হন, যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। পাশাপাশি তুলকারেম শরণার্থী শিবিরে একটি প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ভেঙে পড়লে ১৩ জন আহত হন।
হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব নতুন করে উত্তপ্ত হয়েছে। ২০০৬ সালের যুদ্ধে তারা সরাসরি সংঘর্ষে জড়ায়। এরপর ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হলে এই সংঘাত আবার চরমে পৌঁছায়।
গত সেপ্টেম্বর থেকে ইসরায়েল লেবাননে আকাশ ও স্থলপথে হামলা চালানো জোরদার করেছে। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় লেবাননে অন্তত ৩,৬৭০ জন নিহত হয়েছেন।
গত সপ্তাহে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলের চারটি ভয়াবহ হামলায় হিজবুল্লাহর মুখপাত্র মোহাম্মদ আফিফ নিহত হন। এর প্রতিক্রিয়ায় হিজবুল্লাহপ্রধান নাইম কাসেম বলেন, “বৈরুতের হামলার জবাব তেল আবিবে দেওয়া হবে।”
এই ঘটনার আগে ২৩ সেপ্টেম্বর লেবাননে আকাশপথে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। দক্ষিণ লেবাননে প্রবেশের পর থেকে হিজবুল্লাহ পাল্টা আক্রমণ বাড়িয়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে ৩৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, যা একদিনে সর্বোচ্চ।
হিজবুল্লাহর এই হামলা ইসরায়েল-লেবানন দ্বন্দ্বে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পাল্টাপাল্টি হামলায় সাধারণ মানুষের প্রাণহানি এবং সম্পদের ক্ষতি অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে উঠেছে।
আপনার মতামত লিখুন :