কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপের ফলে আমদানি কমে বাজারে ডলারের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে এবং ব্যাংকগুলোতেও ইতিমধ্যে টাকার সরবরাহ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নানামুখী উদ্যোগের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোও সতর্ক অবস্থানে থাকায় দেশে মার্কিন ডলার ও দেশীয় টাকার সংকট কিছুটা কমেছে। একদিকে ডলারের দাম কমেছে, অন্যদিকে টাকার সরবরাহ বেড়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রবাসী আয়ের ডলার এখন ১১৪-১১৫ টাকা দামে পাওয়া যাচ্ছে, যা আগে ১২০ টাকায় উঠেছিল। অবশ্য প্রবাসী আয় কমায় ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ১১০ টাকা।
অন্যদিকে টাকা নিয়ে ব্যাংকগুলোতে যে টানাটানি শুরু হয়েছিল সেটিও ইতিমধ্যে কমে এসেছে। কয়েকটি ব্যাংক উচ্চসুদে আমানত সংগ্রহ করলেও অন্যগুলো সেই পথে যায়নি।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, ডলার ও টাকার সংকট কমে আসার পেছনে কয়েকটি বিষয় ভূমিকা রেখেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাপাচাপির কারণে আমদানি কমে এসেছে এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি ডলারের দাম নিয়ে কড়াকড়ি আরোপের অবস্থান থেকে সরে আসায় প্রবাসী ও রপ্তানি আয় বেড়েছে। আর টাকার সংকট কমতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে ডলারের বিপরীতে টাকা অদলবদলের (সোয়াপ) সুবিধা।
জানতে চাইলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘একদিকে আমদানি কমে এসেছে, অন্যদিকে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বেড়েছে। এ কারণে ডলারের দাম কমেছে। তবে ইদানীং আবার বাড়তে শুরু করেছে। সামনে বোঝা যাবে বাজার কোনদিকে যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় টাকার জোগান দিচ্ছে। এতে টাকার সরবরাহ বেড়েছে। এটা বাজারের উত্তাপ কমাতে ভূমিকা রেখেছে।’
যেভাবে কমল ডলার–সংকট
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দেশে মার্কিন ডলারের সংকট শুরু হয়। যুদ্ধের জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ও বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি খরচ হঠাৎ বেড়ে যায়। যে কারণে ওই বছরের জুনে ৮৩৭ কোটি ডলারের আমদানি দায় শোধ করতে হয় বাংলাদেশকে। এরপর ঋণপত্র খোলায় কড়াকড়ি ও ঋণপত্র খোলার বিপরীতে শতভাগ পর্যন্ত নগদ টাকা জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। এতে আমদানি দায় কমতে থাকে।
এর মধ্যে গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম আমদানি দায় পরিশোধ হয় গত ফেব্রুয়ারি মাসে। এ মাসে আমদানি দায় পরিশোধ হয় ৪৬৭ কোটি ডলারের। আমদানি দায় পরিশোধ হলো সংশ্লিষ্ট মাসের প্রকৃত ডলার খরচ। এর আগে জানুয়ারিতে আমদানি দায় পরিশোধ হয়েছিল ৫৯৬ কোটি ডলারের। অর্থাৎ ডলারের ওপর চাপ কমে আসছে।
আপনার মতামত লিখুন :