জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বাড়ানোর জন্য নতুন কর আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওপর বাড়তি আর্থিক চাপ পড়েছে। মোবাইল ইন্টারনেটে ২০% থেকে ২৩% সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে, যার ফলে ১০০ টাকার রিচার্জে গ্রাহককে কর বাবদ ৫৬ টাকার বেশি দিতে হচ্ছে।
অন্যদিকে, প্রথমবারের মতো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবায় ১০% সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে ৫০০ টাকার সংযোগে অতিরিক্ত ৭৭ টাকা এবং ১,০০০ টাকার সংযোগে ১৫৫ টাকা বেশি দিতে হবে। নতুন ভ্যাট কার্যকর হওয়ায় ব্রডব্যান্ড গ্রাহকদের খরচ দ্বিগুণ বেড়ে যাচ্ছে।
অপারেটর ও ব্যবসায়ীদের মতে, ‘এক দেশ এক রেট’ প্যাকেজে ৫০০ টাকার সেবায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। তৃণমূলে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছাতে প্রতিটি গ্রাহকের জন্য প্রায় ৪,০০০ টাকা খরচ হয়। নতুন শুল্কের কারণে পরিচালন ব্যয় বাড়ায় সেবার মান ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে, এই ব্যয় গ্রাহকদের ওপরই বর্তাবে।
এতে সাধারণ গ্রাহক ও পেশাজীবীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিশেষত ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এই সিদ্ধান্ত ক্ষতিকর হতে পারে। ইতিমধ্যেই মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা ছয় মাসে ১ কোটি কমে গেছে, যা ইন্টারনেটের বাড়তি খরচের প্রভাব নির্দেশ করে।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ এ সিদ্ধান্তকে হঠকারী বলে অভিহিত করেছেন এবং দ্রুত তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির মনে করেন, ইন্টারনেট খরচ বৃদ্ধির ফলে ফ্রিল্যান্সিং ও ব্যবসায়িক খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য বাস্তবায়নে অন্তরায় হতে পারে।
উপসংহারে বলা যায়, ইন্টারনেট খরচ বৃদ্ধির ফলে দেশের সাধারণ গ্রাহক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা সবাই আর্থিক চাপে পড়েছেন। সংশ্লিষ্ট মহল দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সেবার মান অবনতি এবং গ্রাহক সংখ্যা হ্রাসের আশঙ্কা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :