আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং টাকা ছাপিয়ে ব্যাংক বাঁচানোর উদ্যোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
আইএমএফ প্রতিনিধিদলের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় তুলে ধরেন। ১৬ দিনের সফর শেষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতি কম
ক্রিস পাপাজর্জিও জানান, বাংলাদেশের সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। তিনি বলেন, “টাকা ছাপিয়ে সংকট সামাল দেওয়ার কৌশল ঝুঁকিপূর্ণ। এটি মূল্যস্ফীতি আরও বাড়াতে পারে।” বাংলাদেশ ব্যাংকের কৌশল বাস্তবায়নে সতর্কতার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, পরিকল্পনা সফল না হলে অর্থনৈতিক ঝুঁকি বাড়বে।
অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা
আইএমএফ বাংলাদেশের কর রাজস্বের নিম্নহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর লক্ষ্যে স্বচ্ছ ও ন্যায্য রাজস্ব ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছে সংস্থাটি।
সংস্থাটি আরও কিছু পদক্ষেপের সুপারিশ করেছে। যেমন:
- দ্রব্যমূল্য কমাতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ।
- কর অব্যাহতি বাতিল করা।
- অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো।
- মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ।
- বিনিময় হার আরও নমনীয় করা।
- বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখা।
- জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও ঋণ সহায়তা
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩.৮ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। তবে সংস্থাটি আশা করছে, আগামী অর্থবছর থেকে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে।
আইএমএফ জানিয়েছে, ঋণের চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির বোর্ড মিটিংয়ে। পাশাপাশি নতুন করে চাওয়া ৭৫ কোটি ডলার অনুমোদিত হলে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৩০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা পাবে। এই অর্থ ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ হাতে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপসংহার
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় আইএমএফের পরামর্শ অনুযায়ী কাঠামোগত সংস্কার ও রাজস্ব বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি, টেকসই অর্থনীতি গড়ে তুলতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিকল্পনাগুলো সতর্কতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
আপনার মতামত লিখুন :