বাংলাদেশ শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আসন্ন ২০২৫ সালে জ্বালানি তেলের বাজারে ইতিবাচক পরিবর্তনের সুখবর দিলো আইইএ

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৪, ০৭:৫৮ পিএম

আসন্ন ২০২৫ সালে জ্বালানি তেলের বাজারে ইতিবাচক পরিবর্তনের সুখবর দিলো আইইএ

জ্বালানি তেলের দামে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। ছবি: সংগৃহীত

জ্বালানি তেল নিয়ে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ) একটি আশাব্যঞ্জক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক বাজারে তেলের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে যেতে পারে। এই বাড়তি সরবরাহ তেলের দাম কমাতে পারে যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।

চীনে জ্বালানি তেলের চাহিদা হ্রাস

বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিকারক চীনে চাহিদা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীরগতি হচ্ছে। এর পাশাপাশি দেশটিতে বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে এবং পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। চীনের এই পরিবর্তন কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশগুলোতে জ্বালানি তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি

আইইএ জানিয়েছে, ওপেক প্লাস বহির্ভূত দেশগুলোতে তেলের উত্তোলন দ্রুত বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র টানা ছয় বছর বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদক হিসেবে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। ২০২৪ সালের আগস্টে তাদের দৈনিক উৎপাদন ১.৩৪ কোটি ব্যারেলে পৌঁছেছে। এছাড়াও গায়ানা, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের মতো দেশগুলোও উৎপাদন বৃদ্ধি করছে। ২০২৫ সালে ওপেক-বহির্ভূত দেশগুলোর সম্মিলিত উৎপাদন দৈনিক ১৫ লাখ ব্যারেল বাড়তে পারে।

ওপেক প্লাসের নতুন সিদ্ধান্ত ও চ্যালেঞ্জ

পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক এবং তাদের সহযোগী দেশগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তেলের সরবরাহ কমানোর মাধ্যমে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল। ওপেক প্লাস ২২ লাখ ব্যারেল দৈনিক উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে তারা এই নীতি থেকে বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে। জোটটিতে ২০২৫ সালে উৎপাদন কোটা বাড়ানোর কাজ শুরু হতে পারে। তবে অতিরিক্ত সরবরাহ ওপেক প্লাসের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

জ্বালানি তেলের বাজারে সম্ভাব্য প্রভাব

অতিরিক্ত সরবরাহের কারণে চাহিদার তুলনায় প্রতিদিন ১০ লাখ ব্যারেলের বেশি তেল উদ্বৃত্ত থাকতে পারে। মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগ্যানের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী বছরে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারে নেমে আসতে পারে। এছাড়া কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার কারণে যে বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল তা অতিরিক্ত সরবরাহ এর দ্বারা প্রশমিত করতে পারে।

বিশ্লেষকদের মন্তব্য

বাজার-বিশ্লেষকদের মতে, তেলের অতিরিক্ত সরবরাহ ভবিষ্যতে তেলের দাম কমাতে সহায়ক হতে পারে। তবে ওপেক প্লাসের জন্য এটি একটি বড় নীতিগত চ্যালেঞ্জ।

উপসংহার

বিশ্বজুড়ে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির চাহিদা বৃদ্ধি, চীনের তেল চাহিদার পতন এবং ওপেক-বহির্ভূত দেশগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে ২০২৫ সালে বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের বাজারে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে সক্ষম হলেও ওপেক প্লাসের মতো সংস্থাগুলোর জন্য তা কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে যাবে।

 

Link copied!

সর্বশেষ :