সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে নজর দেওয়া, শীর্ষ ঋণখেলাপিদের নাম প্রকাশ ও সরকারি খরচ পর্যালোচনায় কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছেন দেশের স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদরা। গত রোববার রাজধানীর পদ্মা গেস্ট হাউজে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে প্রাক-বাজেট বৈঠকে অর্থনীতিবিদরা এ সুপারিশ করেন।
প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, `সরকারের উচিত শীর্ষ খেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করা। একই সঙ্গে ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।` দেশে যথাযথ আইন ও প্রতিষ্ঠান থাকলেও আইনের প্রয়োগ হয় না বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, `সরকারের খরচ কমাতে হবে। তবে প্রথমে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, `প্রয়োজনে সরকার মেগা প্রকল্পে খরচ কমাতে পারে। তবে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে খরচ বাড়াতে হবে।` সরকার যাতে সীমিত রাজস্ব যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারে সেজন্য খরচ পর্যালোচনা কমিশন গঠনের সুপারিশ করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, `অর্থনীতিবিদরা সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেছেন, সরকার সঠিক পথেই আছে।` শীর্ষ ঋণখেলাপিদের নাম প্রকাশ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেছেন, `দেখা যাক।` সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের ডিস্টিংগুইশড ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো ও পরোক্ষ কর কমানোর সুপারিশ করেছেন।
দুর্নীতি কমাতে কর প্রশাসনে ডিজিটালাইজেশন ও সুশাসনের দিকে নজর দিতে হবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন, `সরকার কিছু সঠিক উদ্যোগ নিয়েছে। তবে সেগুলো যথাযথ বাস্তবায়ন দরকার।` পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, `বাজারভিত্তিক বিনিময় হার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাবে।`
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল বারকাত, প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস (পিডব্লিউসি) বাংলাদেশের ম্যানেজিং পার্টনার মামুন রশিদ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান মাসুদা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি সঠিক পথেই আছে উল্লেখ করে অর্থনীতিবিদরা জানান, রাজস্বনীতিও একই রকম হওয়া উচিত।
আপনার মতামত লিখুন :