বাংলাদেশ শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১

ঈদে নতুন আসবাবে সাজুক ঘর

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৪, ১০:২৪ পিএম

ঈদে নতুন আসবাবে সাজুক ঘর

আজকাল অনেকে থিম ধরে অন্দরসজ্জা করেন

বাড়ির বসার ও খাবার ঘর সাধারণত সবচেয়ে সরব জায়গা। আর ঈদের দিন হলে তো কথাই নেই। সারা দিন নানা রকম খাবারে টেবিল থাকে ঠাসা। আর পরিবার, আত্মীয়স্বজন এলে তো বসার ঘরেই জমে আড্ডা। তাই ঈদের আগে সব দিক ভেবেই বসার ও খাবার ঘরের নতুন আসবাব কিনতে পারেন।

বসার বা খাবার ঘরের আসবাব কেনার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে—

•     প্রাথমিকভাবে কোন আসবাব কীভাবে রাখবেন, সেটার একটা ছক এঁকে ফেলুন। কাগজে-কলমে একটা নকশাও করতে পারেন। কেমন ধরনের সোফা, টেবিল, চেয়ার ব্যবহার করবেন তার ডিজাইন, বসার ঘরে আলো, চলাচলের যথেষ্ট জায়গা কেমন থাকছে, এসব বিবেচনায় নিয়ে আসবাব বাছাই করুন।

•     বাড়ির নকশাতে বসার আর খাবার ঘর পাশাপাশি হতে পারে। আবার অনেক সময় রান্নাঘর–খাবার ঘর পাশাপাশি হয় আর বসার ঘর আলাদা। এসব কিছু বিবেচনা করেই এই ঘরগুলোর প্রধান আসবাবগুলো বেছে নিন। খাবার ঘর আর বসার ঘর যদি একই সঙ্গে মিশে যায় তাহলে আসবাবেও সেই মিল রাখুন। মানে এক জায়গায় কালো আসবাব, আরেক জায়গায় কাঠ রঙের আসবাব হলে দেখতে ভালো লাগবে না।

•     বসার ঘর আর খাবারের ঘরের দেয়ালের রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আসবাব কেনা উচিত। আজকাল অনেকে থিম ধরে  অন্দরসজ্জা করেন। নির্দিস্ট কোনো থিম থাকলে সেভাবে আসবাবের নকশা করুন। হয়তো আপনার অন্দরের থিম বোহো, কিন্তু একটা আসবাব কিনলেন মডার্ন, বাকি আসবাবগুলোর সঙ্গে সেটা মানানসই না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

বসার ঘরের আসবাব

 সোফা বা ডিভান: বসার ঘর, টিভি ও সোফা যেন একটি আরেকটির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত। ঈদ উপলক্ষে বাজারে আসে আধুনিক নকশার সোফা বা ডিভান। সেখান থেকে আপনার অন্দরসজ্জার কথা মাথায় রেখে পছন্দ করে নিন। আসবাব প্রতিষ্ঠান হাতিল–এর পরিচালক শফিকুর রহমান বলেন, ‘বসার ঘরের আকার-আয়তন অনুযায়ী তিন বা পাঁচ আসনের সোফা পছন্দ করতে পারেন। অনেক সময়ই দেখা যায় পাঁচ সিটের বড় বড় সোফা রাখার কারণে জায়গাটা বেশ আঁটসাঁট হয়ে পড়ে, এ ক্ষেত্রে সিঙ্গেল সোফাও ব্যবহার করতে পারেন। ঘরের ডিজাইন অনুযায়ী কাস্টমাইজ করার দরকার হলে, তা–ও করে নিতে পারেন।’

অনেকেই আবার বাসার ঘরে বড় আকারের সোফা বা ডিভান রাখতে চান না, কারণ সরানো সমস্যা। এ ক্ষেত্রে শফিকুর রহমান বলেন, ‘হাতিলের ফার্নিচারগুলো “নক ডাউন” পদ্ধতিতে করা বলে সহজেই স্থানান্তর করা যায়।’ বড় সোফা রাখার জায়গা যদি না থাকে, সোফার পাশে কয়েকটি চেয়ার দিয়েও বসার ঘরটি সাজিয়ে নিতে পারেন।

সোফার সামনের টেবিল: সোফার সামনে একটি মাঝারি আকারের টি–টেবিল রাখা আবশ্যক। অনেক সময় বসার ঘরেই হালকা নাশতার আয়োজন করা হয়। সেই সময়ে এই ধরনের ছোট টেবিল দরকার পড়ে। অতিথি আপ্যায়নের পর অনেক সময় এখানেই চা খেতে খেতে জমে ওঠে আড্ডা। তখন এই টেবিলের গুরুত্ব বাড়ে। এই টি–টেবিল সোফার উচ্চতা বুঝে কেনা উচিত। সোফার গদির তুলনায় টেবিল উঁচু হয়ে গেলে দেখতে ভালো লাগে না।

কফি টেবিল: চা-কফিকে মনের মতো করে উপভোগ করার জন্য চাই তেমন একটা পরিবেশ। অনেক বাড়িতেই আজকাল আলাদা করে চা–কফির জন্য একটা কোনা তৈরি করা হয়। সেখানে একটা ছোট্ট টেবিলের দুই পাশে দুটো চেয়ার আর পাশে একটা শেলফে থাকে উপকরণ। বাসায় তেমন কিছু করতে চাইলে আগে দরকার ঠিক জায়গা নির্বাচন। কফি কাউন্টার টাইপ নকশা হলে বড় পায়ার স্টুল ব্যবহার করা উচিত। হতে পারে সেটা বসার রুমের বড় জানালার ধারে বা ইনডোর প্লান্টের পাশে। এই ধরনের টেবিল ও চেয়ার কিছুটা উঁচু নিতে চেষ্টা করুন। সেটার সঙ্গে মিলিয়ে পাশে রাখুন একটা কয়েক তাকের র‍‍্যাক।

এ ছাড়া বসার ঘরে বুকশেলফ, ওপেন শেলফ আর কর্নার শোকেস টাইপ আসবাবে নানা রকম শোপিস রাখলে দেখতে ভালো লাগবে।

খাবার ঘরের আসবাব

একজন মানুষ কতটা সামাজিক, সেটা নাকি তার খাবার ঘর দেখেই বোঝা যায়।

 ডাইনিং টেবিল–চেয়ার: খাবার ঘরের মূল আকর্ষণ ডাইনিং টেবিল। এই সময়ে বিভিন্ন নকশা, রং আর উপাদানের ডাইনিং টেবিল ঘরের শোভা বৃদ্ধি করছে। কাঠ, কাচ বা গ্রানাইট—‘হাতিল’–এর ডাইনিং টেবিল টপে নানা বৈচিত্র্য। শফিকুর রহমান জানান, হাতিলের আসবাবে ব্যবহৃত সব কাঠ জার্মানির পরিকল্পিত বনায়ন থেকে সংগ্রহ করা।

খাবার টেবিলে যদি মার্বেল টপ ব্যবহার করা হয়, তাহলে চেয়ারগুলোও হওয়া চাই অভিজাত। সে ক্ষেত্রে খানিকটা রাজকীয় নকশার ফোমযুক্ত আসবাব ব্যবহার করতে পারেন।

আবার ঘরে যদি থাকে শৈল্পিক আবহ, তাহলে খাবার টেবিলের জন্য বেছে নিতে পারেন কাঠের আসবাবের হালকা নকশা। আজকাল টেবিলের এক বা দুই ধারেই বেঞ্চ রেখে খাবার আয়োজনের চল দেখা যাচ্ছে। সাধারণত জাপানে এই কেতায় ঘর সাজাতে দেখা যায়। এই চল এখানেও শুরু হয়েছে। বাজারেও মিলবে সেই ধরনের আসবাব। শুধু একটু খোঁজ রাখতে হবে।

মিনি ক্যাবিনেট, ডিনার ওয়াগন: একটি ডিনার আয়োজন করতে গ্লাস, প্লেট, চামচ থেকে শুরু করে আরও অনেক জিনিস লাগে। সবটা তো আর টেবিল রাখা যায় না। তাই এসব জিনিস রাখতে টেবিলের পাশে সাইডবোর্ড, মিনি ক্যাবিনেট আর ডিনার ওয়াগন অনেক উপকারী। বিভিন্ন উপাদান, রং ও আকারের সাইডবোর্ড বা মিনি ক্যাবিনেট আপনার খাবার ঘরের জায়গা অনুসারে কাস্টমাইজ করে নিতে পারেন। বুফে ডিনার আয়োজনেও এই ধরনের আসবাবের ওপরের অংশ কাজে
লাগানো যায়।

ঈদের আগে নতুন যে আসবাবই কিনতে চান, বাজার বুঝে দেখে কিনুন। আর প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড থেকে আসবাব নিলে সেটা হয় টেকসই, সার্ভিসিং নিয়েও নিশ্চিন্ত থাকা যায়।

 

Link copied!

সর্বশেষ :