বাংলাদেশ শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১

ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বেচ্ছায় ব্যাংকগুলো একীভূত হতে পারবে: কেন্দ্রীয় ব্যাংক

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৪, ০৩:০১ এএম

ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বেচ্ছায় ব্যাংকগুলো একীভূত হতে পারবে: কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, “আগামী বছরের মার্চে নীতিমালা অনুযায়ী যারা দুর্বল তালিকায় পড়বে, তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক চর্চা অনুসরণ করে কোন পদ্ধতিতে ও কী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ব্যাংক একীভূত হবে, তা নিয়ে প্রণয়ন করা হবে এ নীতিমালা।”

 

চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ব্যাংকগুলো চাইলে স্বেচ্ছায় একীভূত হতে পারবে। অন্যথায় ব্যাংকের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একীভূত করার বিষয়ে নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেবে। এতে আমানতকারীদের স্বার্থের কোনো হানি হবে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।  

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, "আগামী বছরের মার্চে নীতিমালা অনুযায়ী যারা দুর্বল তালিকায় পড়বে, তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক চর্চা অনুসরণ করে কোন পদ্ধতিতে ও কী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ব্যাংক একীভূত হবে, তা নিয়ে প্রণয়ন করা হবে এ নীতিমালা।"

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, যেসব ব্যাংক একীভূত হবে, ওই ব্যাংকগুলোর স্বাস্থ্য ভালো অডিট প্রতিষ্ঠান দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। এরপরই একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ব্যাংক একীভূত হলে তা হবে যথাযথ ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়। একীভূত হলে ভালো ব্যাংক যাতে দুর্বল না হয় ও দুর্বল ব্যাংক যাতে ভালো হয়— উভয় দিকেই লক্ষ রাখা হবে।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত ব্যাংকগুলোকে লাল, হলুদ ও সবুজ তালিকাভুক্তি প্রসঙ্গে মেজবাউল হক বলেন, "এটা ব্যাংকের স্বাস্থ্য দেখার কোনো সঠিক পদ্ধতি নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগ নানা সময়ে ব্যাংকের তালিকা করে থাকে। এই তালিকাটা ধারণাভিত্তিক। যেখানে কোন পরিস্থিতি হলে কী হবে, তা বিবেচনায় নেওয়া হয়। ব্যাংকের স্বাস্থ্য দেখার একমাত্র উপাদান নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, যা ক্যামেলস পদ্ধতির মাধ্যমে দেখা হয়।"

চলতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এর নেতৃবৃন্দের সাথে এক বৈঠক অংশ নেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এসময় তিনি খেলাপি ঋণ কমাতে ও ব্যাংকখাতে সুশাসন নিশ্চিত করার রোডম্যাপের অংশ হিসেবে– আগামী বছরের জানুয়ারি নাগাদ অন্তত ১০টি ব্যাংককে চাপ দিয়ে একীভূত করার পরিকল্পনার কথা জানান। 

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, গভর্নর ব্যাংক মালিকদের একীভূত হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে এবং তারা কোন ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চান তা ঠিক করতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

 

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে, ৫৪টি ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য বিশ্লেষণের পর ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ ৩৮টি ব্যাংককে দুর্বল ঋণদাতা হিসেবে সনাক্ত করা হয়।  

ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের দুই-তৃতীয়াংশ ব্যাংক বর্তমানে দুর্বল অবস্থানে রয়েছে। এদের মধ্যে "রেড জোনে" থাকা ব্যাংকগুলোর অবস্থা চরম নাজুক। "ইয়োলো জোনে" থাকা ব্যাংকগুলোকে দুর্বল এবং "গ্রিন জোনে" থাকা ব্যাংককে সবল রয়েছে বলে জানানো হয়। 

৫৪ ব্যাংকের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি মিলে ১২টি ব্যাংক নাজুক দশায় রয়েছে, এরমধ্যে ৯টি এরমধ্যেই রেড জোনে চলে গেছে। ২৯ ব্যাংকের মধ্যে তিনটি ব্যাংক আছে রেড জোনের খুব কাছাকাছি, ইয়েলো জোনে। 

অন্যদিকে মাত্র ১৬টি ব্যাংক গ্রিন জোনে স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে ৮টিই বিদেশি ব্যাংক। অর্থাৎ গ্রিন জোনে দেশীয় ব্যাংকের সংখ্যা মাত্র ৮টি।

২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বিগত ছয়টি অর্ধবার্ষিক সময়ে ৫৪টি ব্যাংকের তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

Link copied!

সর্বশেষ :