মাইগ্রেনের ভয়ানক মাথাব্যাথার সাথে যারা পরিচিত তারাই জানেন এটি কি ধরণের যন্ত্রণাদায়ক। মাইগ্রেনের ব্যাথা কোনও সাধারণ মাথাব্যাথা নয় ৷ যা একটি ক্রোসিন বা স্যারিডনেই কমে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকে৷ মাইগ্রেন হল একধরণের নিউরোলজিকাল সমস্যা ৷ এর ফলে তীব্র মাথা ব্যাথার পাশাপাশি দেখা যায় বমি বমি ভাব, আলো ও শব্দ সহ্য করতে না পারা, চোখে ব্যাথা, এমনকী মুখের কিছু অংশ যেমন চোয়াল পর্যন্ত ব্যাথা হতে পারে৷ এই ব্যাথা কয়েক ঘণ্টা থেকে প্রায় তিন চার দিন পর্যন্তও ভোগায়।
মাইগ্রেনের ব্যাথা সৃষ্টি হওয়ার কারণ:
খালি পেট: খালি পেটে বেশিক্ষণ থাকলে মাইগ্রেনের ব্যথা বা সমস্যা শুরু হতে পারে। এর কারণ- খালি পেটে থাকলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়। এটি মাইগ্রেনের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই খালি পেটে না থাকার চেষ্টা করুন।
মানসিক চাপ: যারা অনেক বেশি মানসিক চাপ নিয়ে একটানা কাজ করতে থাকেন, নিজের ঘুম ও খাওয়া-দাওয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময় মেনে চলতে পারেন না। তাদের বেশি মাইগ্রেনে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। তাই মানসিক চাপ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। খুব মানসিক চাপে থাকলে এক কাপ লেবু চা খেয়ে নিন। এতে মস্তিষ্ক কিছুটা রিল্যাক্স হবে।
অতিরিক্ত শব্দ: অতিরিক্ত শব্দ, খুব জোরে গান শোনা ইত্যাদির কারণেও মাইগ্রেনের সমস্যা শুরু হতে পারে। প্রচণ্ড জোরে আওয়াজের কারণে প্রায় দুদিন টানা মাইগ্রেনের ব্যথা হওয়ার আশংকা থাকে। তাই সহনীয় মাত্রায় গান শোনার অভ্যাস করুন।
অতিরিক্ত ঘুমানো: মাত্র এক দিনের ঘুমের অনিয়মের কারণে শরীরের ওপরে খারাপ প্রভাব পড়তে পাড়ে। যেমন, যারা নিয়মিত মোটামুটি ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা করে ঘুমোন, তারা যদি হুট করে একদিন একটু বেশি ঘুমিয়ে ফেলেন, সেক্ষেত্রে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হয়ে যেতে পারে। তাই চেষ্টা করুন অতিরিক্ত না ঘুমানোর।
চা পান বন্ধ করে দেয়া: সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় পান করতে অভ্যস্ত। তারা হুট করে সেই অভ্যাস ত্যাগ করলে বা আপাতভাবে বন্ধ করে দিলে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে। তাই হঠাৎ করে চা পান বন্ধ করে দিবেন না।
হার্বাল চা: হার্বাল চা মাথা ব্যাথার পক্ষে খুবই উপকারী৷ হার্বাল চায়ে আঁদা কুচি, লেবু দেওয়া থাকে৷ এর ফলে ব্যাথার প্রকোপ কম থাকে৷ আবার মাইগ্রেনের ফলে যে বমি ভাব তৈরি হয় তা কম করতেও সাহায্য করে এই উপাদানগুলি৷
বরফ প্যাক: মাথা ব্যাথা বেশি হলে একটি প্লাস্টিকে কিছু বরফের টুকরো নিয়ে মাথায় ব্যাথা জায়গায় দিয়ে রাখতে পারেন৷ এতে মাথা ব্যাথা কম হবে৷ বরফ আপনার শিরার স্ফীতি কম করে৷ এতে ব্যাথা কম হতে পারে৷
বিশ্রাম পদ্ধতি: মাথা ব্যাথার প্রকোপ শুরু হলে আপনার মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দিন৷ চিন্তা মুক্ত থাকুন৷ এর জন্য প্রয়োজনে মেডিকেশন, যোগ ব্যায়ামও করতে পারেন৷
ভিটামিন ‘বি২’: ভিটামিন বি২ এর পরিমাণ শরীরে বাড়লে মাইগ্রেনের ব্যাথা কম হয়৷ ৪০০ এম জি ভিটামিন বি২-র ট্যাবলেট মাইগ্রেন কম করতে সাহায্য করে৷ এছাড়া মাছ, মাংস, ডিম, দুগ্ধজাত খাদ্য, চিজ, বাদাম, এসবে ভিটামিন বি২ এর পরিমাণ বেশি থাকে৷ তাই চেষ্টা করুন বেশি বেশি মাছ, মাংস, ডিম, দুগ্ধজাত খাদ্য গ্রহন করার।
আপনার মতামত লিখুন :