শাকিব খান একজন বাংলাদেশী জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা। শাকিব খান ঢালিউডে পদার্পণ করেন রফিকুল ইসলামের `সবাই তো সুখী হতে চায়` ছবির মাধ্যমে। তিনি শাকিব খান নামে আবির্ভূত হন সোহানুর রহমান সোহানের `অনন্ত ভালোবাসা` ছবির মাধ্যমে।
শাকিব খান জন্ম গ্রহণ করেন ঢাকায় একটি মুসলিম পরিবারে । তাঁর বাবা ছিলেন একজন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা এবং মাতা একজন গৃহিণী। তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা হলেন একমাত্ বোন মণি । শাকিব খান এর ইচ্ছে প্রসঙ্গে বলেন, ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হব। কারণ আমি সাইন্সের ছাত্র ছিলাম। সব সময় বুকে লালন করতাম ডাক্তার হয়ে দেশের মানুষের সেবা করব। এর বাইরে যে অপশনটি আমার মধ্যে কাজ করত তা হলো ইঞ্জিনিয়ার হওয়া। খুব পছন্দ ছিল এই পেশাটিও। কিন্তু এইচএসসি পরীৰা শেষ করার পর হঠাৎ করেই যেন ছোটবেলার স্বপ্নগুলো হারিয়ে যেতে থাকল। বলা চলে মনের অজানত্মেই অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক চলে আসে।
নাম তার মাসুদ রানা। নামের প্রভাবেই কী না কে জানে, ক্লাস নাইনে থাকতে মার্শাল আর্টের ভক্ত হয়ে পরে ছেলেটি। নারায়ণগঞ্জে বাড়ির পাশে কেল্লার মাঠে মার্শাল আর্টে ভর্তিও হয়ে যায়। সরকারি চাকুরে বাবা মায়ের একমাত্র আদুরে সন্তানের চলে স্বপ্নের মত যাত্রা। কিন্তু এসএসসির পর কিছু বন্ধুকে ভালো নাচতে দেখে নিজেও উৎসাহী হন নাচে। ভাগ্যদেবী তখন থেকেই যেন হাসতে শুরু করেন। খুঁজতে খুঁজতে নাচের ক্লাস। শিক্ষক আজিজ রেজা। তার আদর স্নেহ। একদিন এফডিসি। গেট থেকে ঝর্ণা স্পট পর্যন্ত যেতেই একজন আলোকচিত্রী বলেন, আপনি ফিল্ম করবেন? আপনার কিছু ছবি তুলি। ছবি তোলা হয়। এরই মাঝে সুদর্শন তরুণটির দিকে নজর পড়ে একজন পরিচালকের।

এমনি করেই ঢালিউডের বর্তমান সুপারস্টার শাকিব খানের চলচ্চিত্র জীবনের বীজ বপন হয়ে যায়। আবুল খায়ের বুলবুলের পরিচালনায় শাকিবের প্রথম ছবি ‘সবাইতো সুখি হতে চায়’। এ ছবির শুটিং শেষ না হতেই তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে ঢালিউডের পরিচাললক প্রযোজকদের মাঝে। সবাই বলাবলি করে, ছেলেটি ভালো ফাইট করে। নাচে দুর্দান্ত, দেখতে সুন্দর আর দেখিয়ে দিলো ভালো অভিনয় করে।
এটা ১৯৯৯ সালের কথা। শাকিব খান অভিনীত প্রথম ছবি সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘অনন্ত ভালোবাসা’ মুক্তি পায় ১৯৯৯ সালের ২৮ মে। ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন চলচ্চিত্রের আরেক অভিনয় শিল্পী মৌসুমীর ছোট বোন ইরিন। যদিও তিনি প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন আফতাব খান টুলু পরিচালিত ‘সবাই তো সুখী হতে চায়’ ছবির মাধ্যমে। ছবিতে তার নাম ছিল ‘মশাল’। ছবি হিসেবে ‘অনন্ত ভালবাসা’ খুব একটা সফল না হলেও নায়ক হিসেবে শাকিব খান সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং ধীরে ধীরে নিজেকে প্রতিদ্বন্দ্বী সকল নায়কের ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যান। আজ শাকিব খান চলচ্চিত্রের ওয়ান এন্ড অনলি নায়ক। পুরো ইন্ডাস্ট্রি একাই টেনে নিয়ে যাচ্ছেন আপন ক্যারিশমায়। দেখতে দেখতে তিনি ২৮শে মে ২০১১ সালে অভিনয়ের একযুগ পূর্ণ করেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের নায়ক হিসেবে রেকর্ডসংখ্যক পারিশ্রমিকের অধিকারী শাকিব খান সর্বশেষ চমক সৃষ্টি করেন চলচ্চিত্র `শিল্পী সমিতির` নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে।
শাকিব খান একমাত্র অভিনেতা, যার আয়কে আন্তর্জাতিক মানে বিচার করা যায়। ছবিপ্রতি তিনি সম্মানী নেন ৩৫ লাখ টাকার বেশি। সে হিসাবে তার প্রতিদিন গড় আয় ১ লাখ ৪৬ হাজার টাকার বেশি। অর্থাত্ খান সাহেবের প্রতি সেকেন্ডের মূল্য এখন ১ টাকা ৭০ পয়সার অধিক। সিনেমার নায়ক হতে চটি ক্ষয় করার যে প্রবাদ প্রচলিত রয়েছে-তা শাকিব খানের ক্ষেত্রে কাহিনী নয়, বাস্তব। অভিনেতার ভাষায়, ‘অনেক কষ্ট করে আজ আমি এ অবস্থানে এসেছি।
তথ্য:সংগৃহীত
আপনার মতামত লিখুন :