নন্দিত অভিনেত্রী জয়া আহসান। দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও প্রসংশা কুড়াচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি কাজ ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন। সেখানে উঠে আসে তার অভিনয়ে আসা, অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা, নাটক ছেড়ে বড় পর্দায় নাম লেখানো, দুই বাংলায় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানা প্রসঙ্গে। বাদ যায়নি ব্যক্তিগত জীবন প্রসঙ্গও। তাঁকে বিচ্ছেদ নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল।
আহসান সম্পর্কে ফিল্মফেয়ারের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান সময়ের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। গত বছর তিনি “কড়ক সিং” ওয়েব ফিল্ম দিয়ে বলিউডে নাম লিখিয়েছেন। তিনি নারী চরিত্রটিকে অনন্য এক মর্যাদায় নিয়ে গিয়েছেন। তাঁর অভিনয়দক্ষতা হিন্দি সিনেমার দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।’
জয়াকে নিয়ে আরও বলা হয়, তিনি সেরা অভিনেত্রী হিসেবে ফিল্মফেয়ার, ক্রিটিকস অ্যাওয়ার্ডসহ একাধিক বিদেশের পুরস্কার যেমন ঝুলিতে ভরেছেন, তেমনি ছয়বার বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
ফিল্মফেয়ারের সাক্ষাৎকারের শুরুতেই জয়াকে প্রশ্ন করা হয়, এর আগেও তিনি বলিউডে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন কি না? জয়া জানান, বেশ কিছু কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু ‘কড়ক সিং’ দিয়ে শুরু করা তাঁর কাছে উপযুক্ত সময় মনে হয়েছে। ছোট হলেও চরিত্রটির নানা স্তর তাঁকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করেছে।
অভিনয় শুরুর দিকে জয়ার তেমন কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তবে সৃষ্টিশীল মাধ্যমে কাজ করার অদম্য ইচ্ছা ছিল। জয়া আরও জানান, তিনি পড়াশোনায় খুবই ভালো ছিলেন।
পাশাপাশি গান ও ছবি আঁকায় আলাদা মনোযোগ ছিল। আবার শৈশব থেকে অভিনয়ও তাঁকে টানত। কিন্তু তাঁর পরিবারের কারও সঙ্গে মিডিয়ার কোনো যোগসূত্র ছিল না। অভিনয়ের স্কুলেও তাঁর পড়া হয়নি। নিজের মতো করেই একটু একটু করে অভিনয়ের পথে পা বাড়ান। যদিও তাঁর মুক্তিযোদ্ধা বাবা এ এস মাসুদ চাইতেন, মেয়ে ফরেন সার্ভিসে যোগদান করুক। কিন্তু সেদিকে জয়ার আগ্রহ ছিল না।
অভিনেত্রী হিসেবে জয়া আহসানের দুই দশকের বেশি সময়ের পথচলা। শুরুতেই নাটকে অভিনয় করে তিনি জনপ্রিয় হন। পরে একসময় নাটকে বিরক্ত হয়ে যান। তখন চাইছিলেন সিনেমায় নিয়মিত অভিনয় করতে। নুরুল আলম আতিক পরিচালিত ‘ডুবসাতার’ সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় নাম লেখান। সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ভারতেও তাঁর এক দশকের বেশি সময়ের ক্যারিয়ার। ক্যারিয়ার নিয়ে নানা প্রসঙ্গে উঠে আসে আলাপচারিতায়। পরবর্তী সময়ে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ এবং পরে কাজের সঙ্গে মানিয়ে যাওয়া নিয়ে কথা হয়।
এই প্রসঙ্গে জয়া ফিল্মফেয়ারকে বলেন, ‘উত্থান-পতন প্রত্যেক মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটা যুদ্ধের মতো। সেই সময়ে আমার মানসিক ধারণাটাই পরিবর্তন হয়ে গেল। আমি পুরোপুরিভাবে কাজের দিকে দৃষ্টি ঘোরাই। সাধারণত সেই সময়ে মেয়েরা অনেক কিছু থেকেই বিচ্যুত হয়ে পড়ে। এমনকি ফোকাস থেকেও সরে যায়। কিন্তু আমার কাজ আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছে। যে কারণে আমি কাজকেই ভালোবেসেছি। আমি কখনোই কাজ থেকে দূরে সরিনি। আমি আমার এই যাত্রাকে ভালোবাসি। এর মধ্য দিয়েই মানুষ আমার প্রশংসা করেন, আমি কাজকেই সম্মান করি।’
আপনার মতামত লিখুন :