গত ডিসেম্বরে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর প্রশংসিত হয় শঙ্খ দাশগুপ্তের সিনেমাটি। এরই মধ্যে সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়েছে কায়রো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ও ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়ায়। পরে ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশ প্যানোরামা সেকশনে সেরা সিনেমার পুরস্কার পেয়েছে ছবিটি। এবার সিনেমাটি দেখা যাচ্ছ ওটিটিতে। আজ বৃহস্পতিবার রাত আটটায় এটি মুক্তি পেয়েছে চরকিতে। এ ছবি দিয়েই বড় পর্দায় অভিষেক হয়েছে মেহজাবীন চৌধুরীর।
সত্য ঘটনার অনুপ্রেরণায় ‘প্রিয় মালতী’ নির্মাণ করেছেন শঙ্খ দাশগুপ্ত। গল্পকার ও চিত্রনাট্যকার শঙ্খ দাশগুপ্ত বলেন, ‘সিনেমায় “মালতী” চরিত্রটি সংগ্রামের। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানসিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাকে। দেশের অনেক নারীর জীবনেই এমন ঘটনা আছে।
জীবনসংগ্রামের পাশাপাশি প্রচলিত কিছু নিয়মকেও প্রশ্ন করেছি আমি। মালতীর সমস্যা ও সংগ্রামগুলো শুধু তার একার নয়, এগুলো দেশের মানুষের সমস্যা-সংগ্রাম। মালতী চরিত্রটি এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর। বিশৃঙ্খল এই শহরে তাকে লড়াই করতে হয় শ্বশুরবাড়ি, সমাজ ও ধর্মীয় রীতিনীতির বিরুদ্ধে। এর পাশাপাশি আমি প্রশ্ন করতে চেয়েছি, একজন মানুষের অস্তিস্ব কি ডেথ সার্টিফিকেট ও ময়নাতদন্ত রিপোর্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে?’
সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় গত ২০ ডিসেম্বর। পরিচালক শঙ্খ দাশগুপ্ত এ সিনেমার মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে। সিনেমায় ‘মালতী’ হয়েছেন মেহজাবীন চৌধুরী। এ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হলো তাঁর। ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে নাটক, সিরিজে নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন মেহজাবীন। তবে ‘প্রিয় মালতী’ সিনেমায় যেন আগের সব কাজ ছাড়িয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন দর্শক ও সমালোচকেরা।
অভিনেত্রী, পরিচালকের পাশাপাশি ফিচার ফিল্মের প্রযোজক হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছেন নির্মাতা ও প্রযোজক আদনান আল রাজীব।
বলা প্রয়োজন, সত্য ঘটনার অনুপ্রেরণায় নির্মিত সিনেমা ‘প্রিয় মালতী’। সিনেমার গল্প এমন- পলাশ আর মালতীর ছোট্ট ছিমছাম সংসার। পলাশ একটি দোকানের সাধারণ কর্মচারী। মালতী অন্তঃসত্ত্বা। বিবাহবার্ষিকীতে দুজন মিলে নৌকায় ঘুরতে বের হয়। কেক কাটে, ঘোরাঘুরি করে। আর দশটা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মতো সুখে সংসার করার স্বপ্ন দেখে তারা। মালতী পলাশকে বলে, ‘আমাকে একটা সেলাই মেশিন কিনে দাও, নায়িকা শাবানার মতো সেলাই করতে করতে একটা ফ্যাক্টরি দিয়া দিমু।’ উত্তরে পলাশ বলে, ‘আমিও তাহলে জসিমের মতো একটা ঠেলাগাড়ি কিনে নিই। ঘুরে ঘুরে লেইস–ফিতা বিক্রি করি।’ তাদের এই সাজানো সংসার হঠাৎ ওলট-পালট হয়ে যায়। অন্যান্য দিনের মতো পলাশ দোকানে যায়। কিছুক্ষণ পর মালতী টিভিতে দেখে, পলাশের দোকান যে ভবনে, তাতে আগুন লেগেছে। পলাশকে পাওয়া যায় না। নিমেষে তা বদলে দেয় তার জীবনের মোড়।
এর আগে অনেকগুলো ওটিটি কনটেন্ট প্রযোজনা করেছেন তিনি। এবার সিনেমা প্রযোজনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘“প্রিয় মালতী”র গল্পটা এতটাই আলাদা যে মনে হয়েছে, এই সিনেমা হওয়া দরকার; সেই তাগিদ থেকেই সিনেমাটির সঙ্গে যুক্ত হওয়া। আর শঙ্খ ও তাঁর ভালো সিনেমা বানানোর প্রতি যে চেষ্টা, তা সব সময়ই আমাকে আকৃষ্ট করেছে। সহকর্মী চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে আমি মনে করি, একে অপরকে সমর্থন করা এবং একসঙ্গে বেড়ে ওঠা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে ফ্রেম পার সেকেন্ড ও ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি। ২০২৩ সালের ১৯ এপ্রিল আসে সিনেমাটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ঢাকা, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হয় সিনেমাটির শুটিং।
আপনার মতামত লিখুন :