তালেবানের শর্তসাপেক্ষে আফগান নারীদের পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার অনুমতি
আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসন শর্তসাপেক্ষে আফগান নারীদের পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের অনুমতি দিতে রাজি হয়েছে। তবে শর্ত অনুযায়ী, নারীদের মাহরাম বা পুরুষ অভিভাবকের সঙ্গে থাকতে হবে।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এই তথ্য জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, তালেবানের পক্ষ থেকে গত শনিবার এ ঘোষণা দেওয়া হয়। একই দিন পাকিস্তানে আফগান শিক্ষার্থীদের জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় পাকিস্তানে বসবাসরত আফগান শরণার্থীরা পেশোয়ার ও কোয়েটায় অংশগ্রহণ করেন। অন্যদিকে আফগানিস্তানের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
আল্লামা ইকবাল স্কলারশিপ প্রোগ্রাম
পাকিস্তানের বিশেষ দূত মোহাম্মদ সাদিক জানিয়েছেন, প্রায় ২১ হাজার আফগান শিক্ষার্থী সম্পূর্ণ অর্থায়িত আল্লামা ইকবাল স্কলারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে ১ হাজারেরও বেশি নারী শিক্ষার্থী রয়েছেন। এই প্রোগ্রামের আওতায় পাকিস্তানের উচ্চশিক্ষা কমিশন (এইচইসি) ২ হাজার শিক্ষার্থীকে বাছাই করবে, যার এক-তৃতীয়াংশ স্থান নারী প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত।
পাকিস্তানের এক সরকারি কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে তালেবানের শর্ত মেনে চলা নিশ্চিত করতে আফগান অভিভাবকদের জন্য ভিসা সুবিধা দেবে পাকিস্তান। তবে তালেবান সরকার এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।
নারী অধিকারে তালেবানের সমালোচনা
আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষা ও অধিকার বিষয়ে কঠোর নীতির জন্য তালেবান প্রশাসনের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই বাড়ছে। জাতিসংঘ তালেবানের এই নীতিকে “লিঙ্গ বর্ণবৈষম্য” বলে উল্লেখ করেছে। যদিও তালেবানরা দাবি করে, তাদের নীতিগুলো ইসলামিক আইন ও আফগান সংস্কৃতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর নারীদের হাইস্কুলে যাওয়া বন্ধ করা হয়। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে নারীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগও বাতিল করা হয়। এটি আফগানিস্তানকে বিশ্বের একমাত্র দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যেখানে নারী ও মেয়েদের মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বাধা দেওয়া হয়।
নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই এ বিষয়ে বলেছেন, “আফগানিস্তানই বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়েদের ষষ্ঠ শ্রেণির পর শিক্ষা গ্রহণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।”
আপনার মতামত লিখুন :