বাংলাদেশ বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

রমজান মাসের ফজিলত ও আমল

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২৫, ০৫:৫১ পিএম

রমজান মাসের ফজিলত ও আমল

রমজান ইসলামিক বর্ষপঞ্জির পবিত্রতম মাস, যা বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য রোজা, নামাজ এবং আধ্যাত্মিক চিন্তাধারার একটি সময় হিসেবে পালন করা হয়। এটি ইসলামিক চান্দ্র বর্ষপঞ্জির নবম মাস এবং অসীম বরকত, রহমত ও মাগফিরাতের সময় হিসেবে গণ্য করা হয়।

রমজানের ফজিলত

  1. কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে
    রমজান মাসেই পবিত্র কুরআন নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে অবতীর্ণ হয়। এ কারণে এই মাসে কুরআন তেলাওয়াত ও তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  2. রোজা একটি ফরজ ইবাদত
    রমজানের রোজা ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম। এটি আত্মাকে পবিত্র করে, আত্মনিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করে এবং তাকওয়া বাড়ায়।
  3. শবে কদরের রাত
    রমজানের শেষ দশকের একটি রাত শবে কদর, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। এই রাতে ইবাদত করলে অপরিসীম সওয়াব লাভ করা যায়।
  4. জান্নাতের দরজা খোলা হয়
    রমজান মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ থাকে এবং শয়তানদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়, ফলে সৎকর্ম করা সহজ হয়।
  5. নেক আমলের বহুগুণ প্রতিদান
    রমজানে করা প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান অন্যান্য মাসের তুলনায় বহু গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
  6. গুনাহ মাফের সুযোগ
    নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখে, তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” (বুখারী, মুসলিম)
  7. জান্নাতে প্রবেশের বিশেষ সুযোগ
    যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজা রাখে, তারা জান্নাতের বিশেষ দরজা ‘আর-রাইয়ান’ দিয়ে প্রবেশের সুযোগ পাবে।

রমজানে করণীয় আমল

  1. রোজা রাখা (সাওম)
    সুবহে সাদিক (ফজর) থেকে সূর্যাস্ত (মাগরিব) পর্যন্ত খাদ্য, পানীয় ও পাপকর্ম থেকে বিরত থাকা এবং উত্তম চরিত্র বজায় রাখা।
  2. তারাবিহ নামাজ পড়া
    এশার নামাজের পর জামাতে আদায় করা বিশেষ নামাজ, যা অনেক সওয়াবের কারণ।
  3. কুরআন তেলাওয়াত করা
    যেহেতু এই মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে, তাই প্রতিদিন কুরআন পড়া ও তা নিয়ে ভাবা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  4. দোয়া করা
    আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও বরকতের জন্য দোয়া করা উচিত। শবে কদরের জন্য সর্বোত্তম দোয়া হলো: “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি”
    (হে আল্লাহ, আপনি পরম ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে ভালোবাসেন, তাই আমাকে ক্ষমা করুন।)
  5. দান-সদকা ও যাকাত প্রদান
    গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। অনেকে রমজান মাসে যাকাত প্রদান করে যাতে সওয়াব বাড়ে।
  6. ধৈর্য ও উত্তম চরিত্র চর্চা
    রাগ নিয়ন্ত্রণ, গিবত থেকে বিরত থাকা এবং অন্যদের সাথে সদাচরণ করা রমজানের গুরুত্বপূর্ণ দিক।
  7. ই’তেকাফ করা
    রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদে ইবাদতে মগ্ন থাকার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা।

রমজান আত্মশুদ্ধি ও আত্মগঠনের শ্রেষ্ঠ সময়। রোজা, নামাজ ও সদকাসহ সকল উত্তম আমলের মাধ্যমে মুসলিমরা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করে ও তাদের হৃদয় পবিত্র করে। এই পবিত্র মাসের সর্বোত্তম সদ্ব্যবহার করে আমরা আল্লাহর রহমত ও চিরস্থায়ী পুরস্কার অর্জন করতে পারি।

 

Link copied!

সর্বশেষ :