জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সম্প্রতি ধর্ষণকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত এবং প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অব্যাহতি প্রদান করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবন অবরোধের ডাক দিয়েছে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ।তাদের অন্য দাবিগুলো হলো ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা; মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্তপূর্বক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা; নিপীড়ক মাহমুদুর রহমান জনির বহিষ্কারাদেশের প্রজ্ঞাপন জারি ও অফিস আদেশ প্রণয়ন করা এবং ইতিপূর্ব যৌন নিপীড়ন সেলে উত্থাপিত সকল অমীমাংসিত অভিযোগসহ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণাপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
রোববার (১০ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের সংগঠক পারভীন জলি।পারভীন জলি বলেন, “আমরা যখন ভর্তি পরীক্ষার আগে এসব দাবি নিয়ে উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম, তখন তিনি আমাদের কাছে সময় চেয়েছেন। বলেছিলেন ভর্তি পরীক্ষা শেষ হলে আমাদের দাবিগুলো দেখবেন। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা শেষে আজকে সিন্ডিকেট হলেও তিনি আমাদের কিছু না জানিয়েই পেছনের দরজা দিয়ে চলে যান।”তিনি আরও বলেন, “আমরা আর উপাচার্যের ওপর আস্থা রাখতে পারছি না। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে পরামর্শ করে আগামীকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করছি।”এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মঞ্চের আহ্বায়ক অধ্যাপক রায়হান রাইন, সংগঠক অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সোহেল আহমেদ প্রমুখ।
এর আগে রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ১৭ এপ্রিলের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সব শিক্ষার্থী ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও হল ত্যাগ করেননি, তাদের একাডেমিক সনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করা হবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজকের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৭ এপ্রিলের মধ্যে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হল ত্যাগ করতে হবে। ত্যাগ না করলে এসব শিক্ষার্থীদের সনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরপরেও যদি নির্ধারিত সময়ে কেউ হল ত্যাগ না করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :