ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় নিহতের সংখ্যা এখনো বাড়ছে। অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে।সোমবার (৪ মার্চ) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সোমবারের আগের সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ১২৪ জন নিহত হয়েছে। সব মিলিয়ে ৭ অক্টোবরের পর থেকে বিগত ১৪৬ দিনে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৫৩৪। এই সময়ে আহত হয়েছে আরও অন্তত ৭১ হাজার ৯৮০ জন।
এদিকে, গাজায় ত্রাণ প্রবেশ একপ্রকার বন্ধ করে দেওয়ায় গাজায় তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। এতে অপুষ্টিতে ভুগে মারা যাচ্ছে অঞ্চলটির শিশুরা। টানা পাঁচ মাসের যুদ্ধে অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুমৃত্যুর হার অনেকাংশে বেড়েছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফসহ শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা কয়েকটি সংস্থা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, রাফাহ শহরের আবু ইউসুফ আল-নাজ্জার হাসপাতালে এক শিশুর মৃত্যুর পর অপুষ্টি এবং অপর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবার অভাবে মারা যাওয়া ফিলিস্তিনি শিশু বেড়ে ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। উত্তর গাজা উপত্যকার কামাল আদওয়ান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গত রোববার জানায়, অপুষ্টি এবং পানিশূন্যতায় ভোগা ছয় শিশু নিবিড় পরিচর্যায় রয়েছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, উত্তর গাজা উপত্যকার বাসিন্দারা দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছেন। প্রয়োজনীয় পানি ও খাদ্যের অভাবে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে হচ্ছে তাদের। তবে এতে সবচেয়ে বাজে অবস্থায় রয়েছে শিশুরা। ফলে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার মতো সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে এসব অঞ্চলের শিশুরা।
এ ছাড়া গাজায় চিকিৎসার অভাবে শিশু মৃত্যুর সংখ্যাও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ১৫০ দিনের মধ্যে ১৫৫টি স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়েছে। এ ছাড়া ৩২টি হাসপাতাল ও ৫৩টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিষেবার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে অন্তত ১২৬টি অ্যাম্বুলেন্সকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে ইসরায়েল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, এ সময় গাজায় ৩৬৪ স্বাস্থ্যকর্মীকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এ ছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালকসহ ২৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
আপনার মতামত লিখুন :