বাংলাদেশ বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১

তসলিমা নাসরিন কায়দা করে বাড়িয়ে নিলেন ভারতের রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৪, ০৫:৪৭ এএম

তসলিমা নাসরিন কায়দা করে বাড়িয়ে নিলেন ভারতের রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ

তসলিমা নাসরিন। ছবি : সংগৃহীত

বেশ কয়েক দিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি বিতাড়িত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। ৬২ বছর বয়সী তসলিমা দীর্ঘদিন ধরে তিনি ভারতে অবস্থান করলেও গত ২২ জুলাই, ২০২৪ তারিখ তার রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি নতুনভাবে চিন্তিত হয়ে পড়েন। কেন্দ্রে বহুবার আবেদন করেও মেয়াদ বৃদ্ধি পাচ্ছিল না। অবশেষে ২১ অক্টোবর অমিত শাহকে উদ্দেশ্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (এক্স হ্যান্ডেল) সরাসরি আবেদন করার পর ২২ অক্টোবর তার রেসিডেন্স পারমিট এর মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।

তসলিমার ভারতে নির্বাসিত জীবন

১৯৯৪ সালে বাংলাদেশে ঠোঁটকাটা তসলিমা নাসরিন ইসলামবিরোধী লেখার কারণে তার বিরুদ্ধে চরমপন্থী গোষ্ঠীর ফতোয়া জারি হয়। যার ফলে তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে শুরুতে তিনি ইউরোপ ও আমেরিকায় আশ্রয় নিলেও পরবর্তীতে ভারতে স্থায়ী হন। ২০০৪ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করেন। কিন্তু তার লেখা বই ‘দ্বিখণ্ডিত’ নিষিদ্ধ হওয়ার পর তিনি আবারও হুমকির মুখে পড়েন এবং কলকাতা ছাড়তে বাধ্য হন। বর্তমানে তিনি দিল্লিতে রেসিডেন্স পারমিট নিয়ে বসবাস করছেন।

রেসিডেন্স পারমিট নিয়ে সমস্যা

সম্প্রতি তসলিমা নাসরিন মেয়াদোত্তীর্ণ রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে বেশ সমস্যায় ভুগে অবশেষে ২১ অক্টোবর এক্স হ্যান্ডেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে সরাসরি ট্যাগ করে একটি পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি জানান, তিনি ভারতকে ভালোবাসেন এবং ভারত তার দ্বিতীয় বাড়ি। এখানে তাকে থাকার অনুমতি প্রদান করলে তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবেন।

সরকার থেকে সাড়া পাওয়া

তসলিমা নাসরিনের এই অভিনব পদ্ধতি খুব তাড়াতাড়িই সাড়া ফেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং একদিন পর ২২ অক্টোবর সরকার থেকেও সাড়া আসে।রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ বৃদ্ধি করায় তিনি ‍‍`এক্স‍‍` এ অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানান । যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়াদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি তবে এই পোস্টে ইতিবাচক বলেই ধরে নেয়া যায়।

বাংলাদেশে ফেরার অনিশ্চয়তা

তসলিমা নাসরিন গত তিন দশক ধরে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারেননি। ১৯৯৩ সালে তার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি থেকে শুরু করে পরবর্তীতে বিভিন্ন উস্কানিমূলক লেখায় তিনি দেশকে হেয় করেছেন বারংবার। এমনকি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি ঢালাওভাবে প্রমানের চেষ্টা করেছেন বাংলাদেশের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার ক্ষমতায় আসার পর এখানে কট্টরপন্থী গোষ্ঠীগুলোর প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটছে।

উপসংহার

ভারতে তসলিমা নাসরিনের অবস্থান নিয়ে জটিলতা শেষপর্যন্ত মিটেছে এবং তিনি আরও কিছুদিন সেখানে থাকতে পারবেন। তবে তার নির্বাসিত জীবন এবং বাংলাদেশে ফেরার অনিশ্চয়তা তাকে সবসময়ই এক বিশেষ সংকটের মধ্যে ফেলে রেখেছে।

 

Link copied!

সর্বশেষ :