ঢাকাসহ দেশের চার বিভাগের ওপর দিয়ে তিন দিন ধরে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে এসব এলাকায় আগামী দু–তিন দিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। তাই এসব এলাকায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বুধবার অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদের স্বাক্ষর করা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সতকর্বাতা জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া চলমান তাপপ্রবাহ এটি সম্ভবত আগামী 72 ঘন্টা এভাবে চলতে থাকবে। এটি আশেপাশের এলাকায় আরও সাধারণ হতে পারে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার মতে, 36°C থেকে 37.9°C এর মধ্যে তাপমাত্রাকে মৃদু তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 38 থেকে 39.9 ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে একটি তাপমাত্রাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা যখন 40°C থেকে 41.9°C এর মধ্যে থাকে, তখন তাকে বলা হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। এবং যখন তাপমাত্রা 42 ডিগ্রির উপরে ওঠে, তখন এটি খুব তীব্র হয়।
জাপান আবহাওয়া সংস্থার মতে, 8 এবং 9 তারিখে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। হালকা বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়াবিদ ড. বেজরাল রশিদ দৈনিক প্রথম সংবাদকে বলেন, বর্তমান গরমে নিয়মিত গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও গরম থেকে স্বস্তি দেবে না। আমাদের ভারী বৃষ্টি দরকার, তার সম্ভাবনা তেমন ভালো নয়।
বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা ও ঈশ্বরদীতে 38 দশমিক 5 ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গরমে স্বস্তি পেতে যা করবেন
এই গরমে কিছুটা স্বস্তি পেতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা মনে করেন, অপ্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়াই ভালো। সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে, এমন জায়গায় না থাকা। বের হলে ছায়াযুক্ত স্থানে চলাফেরা করতে হবে। ঘরে-বাইরে আরামদায়ক পোশাক পরতে হবে।
2 এপ্রিল ঢাকা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 37দশমিক 7ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেদিন এ প্রসঙ্গে ল্যাবএইডের ওয়েলনেস সেন্টারের পুষ্টিবিদ ফাহমিদা হাশেমের সঙ্গে দৈনিক প্রথম সংবাদের কথা হয়েছিল। তিনি কিছু পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন, একজন নারীকে দিনে দুই থেকে আড়াই লিটার ও পুরুষদের আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে। এখন যেহেতু রমজান মাস, তাই ইফতারের পর থেকে সাহ্রি পর্যন্ত সময়টিতে পানি পান করতে হবে।
প্রচণ্ড গরমে অনেক সময় শরীরের ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য হারিয়ে যায়। তাই ডাবের পানি, আখের গুড়, লবণ ও লেবু দিয়ে ঘরে তৈরি শরবত ও স্যালাইন পান করতে হবে। অনেক সময় খাবার হজমেও সমস্যা হয়, পেট গরম হয়ে যায়। তাই বেলের শরবত, তরমুজের শরবত, টক দই দিয়ে মাঠা বা লাবাং তৈরি করে খাওয়া যায়। তবে কোনো শরবতেই অতিরিক্ত চিনি বা লবণ না দেওয়া। সাদা পানিকে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে।
এছাড়াও, পুষ্টিবিদ কিছু খাবারের দিকে মনোনিবেশ করেন যা শরীরে জল সঞ্চয় করে। আমি স্ট্রবেরি, চিয়া বীজ, বাদাম, তরমুজ, নাশপাতি পছন্দ করি। আর সাখরি হল হালকা মশলায় কুমড়া, চিচিঙ্গা, চিংড়ি, পেঁপে, চাল কুমড়া, পটোল, ধুন্দুল বা শসা দিয়ে পাতলা ঝোলের তরকারি।
আপনার মতামত লিখুন :