বাংলাদেশ সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

গাইবান্ধায় স্বামীর মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার গৃহবধূর সংবাদ সম্মেলন

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৫, ০৬:৫৩ পিএম

গাইবান্ধায় স্বামীর মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার গৃহবধূর সংবাদ সম্মেলন

স্বামীর মিথ্যা মামলায় অতিষ্ট হয়ে গৃহবধূর সংবাদ সম্মেলন।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার দক্ষিণ ধানঘড়া গ্রামের মৃত সামিউল বাড়ির রাজ্জাকের কন্যা ফাতেমা তুজ জোহরার সাথে একই উপজেলার পশু হাসপাতাল রোডের আমজাদ হোসেনের পুত্র আসিফ ফয়সাল লেলিনের ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট বিবাহ হয়। তবে বিবাহের পর থেকেই দাম্পত্য জীবনে অশান্তি দেখা দেয়।

বিবাহের কিছুদিন পর ফাতেমার পিতা মৃত্যুবরণ করলে স্বামীর অত্যাচার বাড়তে থাকে। নানান ঝগড়া ও শারীরিক নির্যাতনের কারণে ফাতেমা বাধ্য হয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। সংসার ভেঙে না যাক, এই আশায় ফাতেমার মা তাকে স্বামীর বাড়িতে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু যৌতুকলোভী স্বামী লেলিন শ্বশুরের রেখে যাওয়া সম্পত্তি ও অর্থ দাবি করতে শুরু করেন। মেয়ের সুখের জন্য অসহায় মা নিজের তিনতলা বাড়ি বিক্রি করে ৮ লক্ষ টাকা লেলিনকে দেন।

পরবর্তীতে নানা অজুহাতে আরও ১৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। স্বামী লেলিন এই টাকা ফাতেমার নামে ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেননি। প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ পেলে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

লেলিন তার শ্বশুরবাড়ির গচ্ছিত ২০ হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসার জন্য দাবি করেন। তিনি কাপড়ের ব্যবসা শুরু করলেও তা বন্ধ করে দেন। শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হলে একটি তারিখবিহীন চেক দিয়ে ১ মাস পর টাকা তুলতে বলেন। কিন্তু ব্যাংকে গিয়ে দেখা যায়, সেই অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। এ নিয়ে ফাতেমার উপর আবারও অমানবিক নির্যাতন শুরু হয়।

অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে ফাতেমা গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খালার বাড়িতে আশ্রয় নেন। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলেও লেলিন ঢাকায় পালিয়ে গিয়ে জোহরা, তার মা, খালুর নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। উপায় না দেখে জোহরা ১৭ নভেম্বর ২০২৪ লেলিনকে ডিভোর্সের নোটিশ পাঠান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লেলিন তাকে ও তার পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন।

এরপর গত ৮ জানুয়ারি ২০২৫ ফাতেমার দাদা মৃত্যুবরণ করলে তিনি তার তিন বোনকে নিয়ে দাদাকে দেখতে যান। ফেরার পথে বাদিয়াখালি সিএনজি স্ট্যান্ডের সামনে লেলিন অতর্কিত হামলা চালায় এবং জোহরাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। পরে তার মা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন।

লেলিন বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। তবে অন্য আসামিরা জোহরা ও তার পরিবারকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি ও হুমকি দিয়ে আসছে। এসব থেকে মুক্তি ও নিরাপত্তার দাবিতে জোহরা এবং তার পরিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। তারা ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়ে প্রশাসনের সহায়তা প্রার্থনা করেছেন।
 

Link copied!

সর্বশেষ :