টেকনাফে অপহরণ, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের লাগাম টানতে একটি স্থায়ী সেনাঘাঁটি স্থাপনের দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ি এলাকায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং টেকনাফকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে।
টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসীদের আখড়া হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন অঞ্চল এবং মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সশস্ত্র গ্রুপগুলোর দৌরাত্ম্য ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- গত এক মাসে ১০টির বেশি অপহরণ – ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে।
- সশস্ত্র ডাকাতদের তাণ্ডব – রাতে পাহাড়ি এলাকায় ডাকাতির ঘটনা নিয়মিত ঘটছে।
- মাদক চোরাচালানের নিরাপদ রুট – টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ে মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাচালানকারীদের সক্রিয় উপস্থিতি রয়েছে।
- সন্ত্রাসীদের আধিপত্য – প্রশাসনের নজরদারি কম থাকায় দুষ্কৃতিকারীরা অবাধে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, পুলিশের একার পক্ষে এসব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। সেনাবাহিনীর উপস্থিতি থাকলে অপহরণ, মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ হবে।
স্থানীয়দের দাবি: টেকনাফে সেনাঘাঁটি চাই
অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টেকনাফের পাহাড়ে সেনাঘাঁটি স্থাপনের দাবি জোরালো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন,
- সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলে অপরাধীরা পালিয়ে যাবে।
- অপহরণ ও মুক্তিপণের সংস্কৃতি বন্ধ হবে।
- মাদক চোরাচালান ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমন সহজ হবে।
- সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে।
স্থানীয় নেতা ও সমাজকর্মীরা বলছেন, সেনাবাহিনীর একটি স্থায়ী ঘাঁটি থাকলে অপরাধ দমনে দীর্ঘমেয়াদী সুফল পাওয়া যাবে।
টেকনাফ থানার ওসি জানিয়েছেন, "আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে। তবে কিছু এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা দরকার।"
এদিকে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
টেকনাফের সাধারণ মানুষ অপহরণ ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি নিরাপদ শহর চায়। তাদের বিশ্বাস, সেনাঘাঁটি স্থাপিত হলে এই অঞ্চলের অপরাধ কমে যাবে এবং স্থানীয় বাসিন্দারা স্বস্তিতে বসবাস করতে পারবে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন এই দাবির প্রতি কতটা গুরুত্ব দেয় এবং কত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।
আপনার মতামত লিখুন :