বাংলাদেশ রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

আবারও মন্ত্রিসভার বৈঠক বসতে পারে উত্তরা গণভবনে

দৈনিক প্রথম সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৪, ০২:৪৪ পিএম

আবারও মন্ত্রিসভার বৈঠক বসতে পারে উত্তরা গণভবনে

ছবি: প্রথম সংবাদ

নাটোরের উত্তরা গণভবনে আবারও বসতে পারে মন্ত্রিপরিষদের সভা। সেই লক্ষ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। এজন্য সংস্কারও চলছে গণভবনের ভেতরের অংশে। এ নিয়ে সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিব উত্তরা গণভবন পরিদর্শন করেছেন বলে জানিয়েছেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। 

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, এর আগেও উত্তরা গণভবনে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আবারও উত্তরা গণভবনে মন্ত্রিপরিষদের‌ সভা হবে কিনা তা প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করছে।

ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, মন্ত্রিসভা আয়োজনকে লক্ষ্য রেখে গণভবনের ভেতরের অংশে সংস্কার করা হয়েছে। সম্প্রতি ডিসি সম্মেলনে বিষয়টি তোলা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই উত্তরা গণভবনে হবে মন্ত্রিসভার বৈঠক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোরের জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা ঢাকা পোস্টকে বলেন, এর আগেও একবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উত্তরা গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠক করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাইলে উত্তরা গণভবনে যেকোনো সময় মন্ত্রিসভার বৈঠক করতে পারেন। আমরা গণভবনের সৌন্দর্য বর্ধনে কাজ করেছি। এবিষয়ে এখনো কোনো চিঠি পাইনি। আমরাও প্রস্তুতি রেখেছি। নাটোরের জনপ্রতিনিধি এবং জনগণের আকাঙ্খা রয়েছে উত্তরা গণভবনে আবারও মন্ত্রিসভার বৈঠক হোক।

প্রসঙ্গত, দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে নাটোরের দিঘাপতিয়া রাজবাড়ির নাম পরিবর্তন করে ‘উত্তরা গণভবন’ হিসেবে নামকরণ করেন। তারপর উত্তরা গণভবনে প্রথম বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সরকারের সময়েও অনেকটা অনুষ্ঠানিতার খাতিরেই মন্ত্রিসভার বৈঠক করা হয়েছে।

১৯৮০ সালের ১৭ নভেম্বর সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই উত্তরা গণভবনে একবার মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন। এরপর সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াও উত্তরা গনভবনে মন্ত্রিপরিষদের‌ বৈঠক করেন।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগের যথাযথ সম্মান জানাতে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় একবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের আয়োজন করেন। এরপর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মেয়াদে উত্তরা গণভবনে আর মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি।

ইতিহাস মতে জানা যায়, নাটোরের উত্তরা গণভবন আঠারো শতকে দিঘাপতিয়া মহারাজাদের বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হত। দিঘাপতিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা দয়ারাম রায় ১৭৩৪ সালে প্রায় ৪২ একর জমির ওপর দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৯৭ সালের ১২ জুন প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পে রাজপ্রাসাদটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে রাজবংশের ষষ্ঠ রাজা প্রমদনাথ রায় সম্পূর্ণ প্রাসাদটি পুনঃনির্মাণ করেন। চারদিকে সীমানা প্রাচীরবেষ্ঠিত ৪২ একর জমির ওপর রাজবাড়ির ভেতর বিশেষ কারুকার্যখচিত উত্তরা গণভবনের মূল ভবনসহ ছোটবড় মোট ১২টি ভবন নির্মিত হয় সেসময়।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর দিঘাপতিয়ার রাজপরিবার ভারতে চলে যান। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৭ সালের ২৪ জুলাই দিঘাপতিয়া রাজবাড়িকে গভর্নর হাউজ হিসেবে ঘোষণা করেন পূর্ব পাকিস্থানের গর্ভনর মোনায়েম খান। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী উত্তরা গণভবনকে উত্তরাঞ্চলীয় হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহার করে।

Link copied!

সর্বশেষ :