বাংলাদেশ রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

৯ মাস বেতন বিহীন, হতাশায় বাংলাদেশ রেলওয়ের গেটকিপার মিজানের মৃত্যু

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫, ০৭:০৭ পিএম

৯ মাস বেতন বিহীন, হতাশায় বাংলাদেশ রেলওয়ের গেটকিপার মিজানের মৃত্যু

রেলওয়ে গেট কিপারের মৃত্যু

দীর্ঘ ৯ মাস বেতন বিহীন থাকার পর তীব্র হতাশা ও দুর্শ্চিন্তায় পারিবারিক অভাব অনটন চাপ সয্য করতে না পেরে গত ৮ই ফেব্রুয়ারী সকাল ১০ টায় স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আজ ৯ই ফেব্রুয়ারী আনুমানিক দুপুর ১.৪০ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ে মান উন্নয়ন শীর্ষ প্রকল্পের গেইট কিপার। গেইট নং ই-৯ (AJ) তিস্তা সেশনের কর্মরত ছিলেন। মৃত্যু কালে তিনি স্ত্রী ও ১ ছেলে রেখে গেছেন। 

এই পর্যন্ত বিভিন্ন সময় বেতন বন্ধ থাকায় মানসিক চাপ সহ্য করতে না পারায় মোট ৯ জন গেইটকিপার মারা গেছেন। হাসাপাতাল কতৃপক্ষ জানায়, রোগী তাদের সাধ্যের বাহিরে এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলেন। কিন্তু দীর্ঘ ৯ মাস বেতন বন্ধ থাকায় পারিবারিক ভাবে টাকা পয়সার ব্যবস্থা করতে অক্ষম হওয়ায় মিজানকে ঢাকা নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এই বিষয়ে পশ্চিমের পিডি বিরবলের সাথে ফোন কলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, "বিষয়টি দুংখজনক, ৯ মাস বেতন বন্ধ থাকায় তারা আসলেই খুব মানবেতর জীবন যাপন করছিলো, কিন্তু হাসপাতালের রিপোর্ট অনুযায়ী সে বিভিন্ন মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে স্ট্রোক করে মারা যান।"

একজন গেইটম্যান জানায়, "বেতনের জন্য বার বার রেলভবন আন্দোলন করা হলেও কোন স্থায়ী সমাধান হয়নি। বার বার আশ্বাস দিলেও মন্ত্রনালয়ের কথা ও কাজে কোন মিল নেই। আমাদের কলিগরা বেতন ছাড়া ডিউটি করে পরিবার নিয়ে সবাই খুব কষ্টে আছে।"

তারা আরো জানায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর বকেয়া বেতন ও চাকরি রাজস্ব এর দাবিতে রেলভবনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করি। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে সেনা ক্যাপ্টেন আরাফ সহ গেইটম্যান ৬ জন প্রতিনিধি নিয়ে রেলের ডিজি সচিব ও অন্য অন্য অফিসারদের উপস্থিতিতে রেলভবনে মিটিং হয়। মিটিংয়ে ডিজি সরদার সাহাদাত হোসেন চূড়ান্ত সিন্ধান্ত দেন যে নভেম্বর মাসের ১ তারিখের মধ্যে বেতন ক্লিয়ার করা সহ চাকরি স্থায়ীর জয়েন্ট লেটার দেয়া হবে। কিন্তু নভেম্বর এর পর ডিসেম্বর অতিবাহিত হলেও বেতন ও চাকরির কোনো সুরাহা হয়নি।

১৯ ডিসেম্বর তারা আবার রেলভবন ঘেরাও করলে, সচিব ও ডিজি পুনরায় বৈঠক করেন। তারা জানান যে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপের মাধ্যমে চাকরি রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করা ও বেতন পরিশোধ সম্ভব। প্রধান উপদেষ্টাকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলা হয়েছে এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বেতন বা রাজস্বের কোনো ব্যবস্থা হয়নি। এতে গেটকিপারদের মধ্যে চরম হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

 

Link copied!

সর্বশেষ :